Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে আইনমন্ত্রী সংসদে হুমকি দিচ্ছেন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:১৯ | আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:২৯

ঢাকা: মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে আইনমন্ত্রী সংসদে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

‘মিথ্যা তথ্য ও মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে সংসদে অলরেডি একটি আইন আছে, সেটা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট। আরও কিছু আইন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংসদে আসবে’— আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ছিটেফোটাও নেই। সরকারি সংস্থাগুলোকে কাজে লাগিয়ে গণমাধ্যমে তাদের মিথ্যা জয়গান প্রচার করছে। এরমধ্যেও দেশি ও বিদেশি কিছু মিডিয়ায় সরকারের নানা অপকর্ম প্রকাশ হচ্ছে। সেটিও যাতে প্রকাশ হতে না পারে সে জন্য কিছুদিন আগে সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রনয়ণ করা হয়েছে।’

‘এবার মানুষের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে আইনমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে হুমকি দিচ্ছেন। তার মানে, জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেবে তারা। সরকারের বিরুদ্ধে কেউ সমালোচনা করতে পারবে না। অর্থাৎ নাগরিকদের ওপর নজরদারী আরও তীব্র হবে। এটি সমগ্র জাতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার এক নতুন কালো আইন প্রনয়ণের আলামত। মূলত, সরকারের দুঃশাসন, লুটপাট ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে সে লক্ষ্যেই একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ তৈরি করছে সরকার’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকার দুঃশাসনের প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য আরও মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভোটারবিহীন অবৈধ ক্ষমতার গরিমায় মন্ত্রীরা জুলুমের তীব্রতা বৃদ্ধির হুমকি দিয়ে জনসমাজে ভীতি ছড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। সরকার মানুষের ন্যুনতম অধিকার দিতে রাজি নয়। এদের কাছে জনগণ নিতান্তই গৌণ, উপেক্ষিত তাচ্ছিল্যের একটি বিষয়।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সরকার নিয়ন্ত্রিত ৪টি পত্রিকা ছাড়া সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতা দখল করে প্রতিনিয়ত গণবিরোধী কালা-কানুন করছে। আবারও নতুন করে শুরু হয়েছে গ্রেফতার, সভা-সমাবেশে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের হামলা, আক্রমণ চালিয়ে গণতন্ত্রমণা নেতা-কর্মীদের রাস্তার ওপর ফেলে শারীরিক অত্যাচার করা।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল গণতন্ত্র মঞ্চের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে জোনায়েদ সাকিসহ ৫০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এই সরকারি নিষ্ঠুর যাঁতাকলে এ দেশে মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আশা-আকাঙ্ক্ষা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।’

রিজভী বলেন, সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা না করে সরকার আবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করে যখন ইচ্ছা বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারবে সরকার। এই স্বেচ্ছাচারি আইন অনুমোদন করিয়ে জনগণকে নিপীড়ন ও ফতুর করার নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। তার ঘোষণা অনুযায়ী, ১লা মার্চ থেকে বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি সর্বনিম্ন ৩৪ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা বৃদ্ধি কার্যকর হবে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থাৎ বিদ্যুতের দাম গড়ে ইউনিট প্রতি ৫২ পয়সা করে বাড়বে। শতকরা হিসাবে তা ছয় শতাংশের মতো। বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম আড়াই শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে যখনই লুটেরা সরকারের টাকায় টান পড়ছে তখনই গ্যাস-বিদ্যুৎ পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। সরকার আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সাধারণ জনগণের পকেট শূন্য করার নীতি গ্রহণ করেছে।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘জনগণের রক্তপান করে আওয়ামী আগ্রাসী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। গ্যাস সংকট জিইয়ে রেখে এলএনজির ব্যবসার দ্বার খোলা হয়েছে। সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছেন। এটা স্পষ্ট যে, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের লোকসান আসলে সংশ্নিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বশীলদের অব্যবস্থাপনা, অবহেলা আর দুর্নীতির ফল। কিন্তু এর দায় মেটাতে হচ্ছে জনগণকে।’

তিনি বলেন, ‘এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের আওয়ামী পাগলা ঘোড়ার ধাক্কায় মানুষের জীবন চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন শ্রমিক, কৃষক, চাকরিজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চিকিৎসা, লেখা-পড়া, বিনোদন, কাপড়-চোপড় এমনকি খাওয়ার খরচ মেটাতে না পেরে অসীম হতাশায় দিন যাপন করছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করছেন। শেখ হাসিনা তার কতৃর্ত্ববাদের সামাজিক ভিতটি বহুদিন ধরে গড়ে তোলার চেষ্টায় গণতন্ত্রের বহুত্বের ধারণাকে মিলিয়ে দিয়ে এক নিরঙ্কুশ শাসক হয়ে উঠেছেন। তাই জনগণের জীবন-জীবিকার কোনো তোয়াক্কা করেন না।’

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

টপ নিউজ রুহুল কবির রিজভী

বিজ্ঞাপন

২৪ ম্যাচ পর হারল লিভারপুল
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৩১

সাভারে তিন গাড়িতে আগুন, নিহত ৪
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর