সেনা সংকট মেটাতে শিক্ষার্থীদের দিকে নজর মিয়ানমার জান্তার
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:০৩ | আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:২৯
মিয়ানমারের শিক্ষার্থীদের ইউনিভার্সিটি ট্রেনিং কর্পস’তে (ইউটিসি) যোগদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার। এটি বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ক্ষয়প্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং’সহ অনেক জেনারেলই ইউটিসি’র সদস্য ছিলেন। খবর দ্য ইরাবতি।
মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর সঙ্গে পেরে উঠছে না জান্তা বাহিনী। ইতোমধ্যে অনেক সেনা হারিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। হারাতে হচ্ছে একের পর এক এলাকা। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জান্তা বাহিনীতে যোগ দিতে চাচ্ছেন না দেশটির নাগরিকরা। ফলে নিয়োগ আইন সংশোধন করে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করে জান্তা সরকার। এখন শিক্ষার্থীদের ইউটিসি’তে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এভাবে সেনাবাহিনীর নিয়োগ সংকট মোকাবেলার চেষ্টা করছেন জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং।
ইউটিসি’র বাকি সাবেক সদস্যদের মধ্যে দেশটির সংসদের স্পিকার টি খুন মায়াত, সাবেক সেনাকর্মকর্তা জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল খিন জাও উ, সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল সেইন উইন, জান্তা শান্তি আলোচক লেফটেন্যান্ট জেনারেল উইন বো শিন এবং আইয়ারওয়াদি অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিন মং উইন রয়েছেন।
সেনাবাহিনী যোগদান বাধ্যতামূলক করে আইন করার পর শিক্ষার্থীরা ইউটিসি’তে যোগ দেওয়া বন্ধ রেখেছে। কিন্তু জান্তা সরকার চায় শিক্ষার্থীরা ইউটিসি’তে যোগ দেক যাতে করে তাদের তাদের রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে নিয়োগ করা যায়।
ঔপনিবেশিক শাসনামলে রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯২২ সালে প্রথম ইউটিসি গঠিত হয়েছিল। এটি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ইউনিভার্সিটি অফিসার ট্রেনিং কর্পস’র আদলে তৈরি করা হয়েছিল। শিক্ষিত অফিসারদের নিয়োগ করা এবং সেই সব বেসামরিক ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা যারা ভবিষ্যতে সামরিক বাহিনীতে জীবন গড়তে চান।
জান্তা সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ইউটিসি সদস্যদের ডিরেক্টরেট অব মিলিশিয়া এবং বর্ডার গার্ড ফোর্স দ্বারা পরিচালিত হয়। এসব শিক্ষার্থীদের চার বছরের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রতি বছর অক্টোবরে একটি ক্যাম্পসহ শিক্ষাবর্ষে সপ্তাহে তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদের।
দেশটির ইয়াঙ্গুন, মান্দালে, মাওলামাইন, তাউংগি, নাইপিতাও, প্যাথেইন এবং টাউনগুতে ইউটিসি রয়েছে বলে জান্তা সরকারের সংবাদমাধ্যম কিমন ডেইলি জানিয়েছে।
ইয়াঙ্গুন ইউনিভার্সিটির তথ্য এবং ইউটিসি চেয়ারম্যান ড. টিন মং তুন বলেছেন, যখন প্রয়োজন হবে মিয়ানমারকে সেবা দিতে স্নাতক শিক্ষার্থীদের ইউটিসি’তে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ইয়াঙ্গুনের ইউটিসি’র কমান্ড ক্যাপ্টেন মিন উইন মোন বলেন, জাতীয় জরুরি পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত জনবল প্রদানের জন্য সংস্থাটি শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে বিভিন্ন পদে সামরিক বাহিনীতে চাকরি করার সুযোগ দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তা এবং ইউটিসি শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে জান্তা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সংস্থাটি মৌলিক দক্ষতা শেখায় এবং দেশকে রক্ষা করতে সামরিক বাহিনী কী করে তা ব্যাখ্যা করে।
সারাবাংলা/এনএস