হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার বর্ষপূর্তি আজ
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩০ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:০৩
ঢাকা: ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির এইদিনে বইমেলায় ঘটেছিল নৃশংস এক হামলার ঘটনা। সেদিন রাত ৯টায় বইমেলা থেকে ফিরছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের অধ্যাপক, প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদ। টিএসসির চত্বর এলাকায় পৌঁছানো মাত্র কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই মৌলবাদি জঙ্গিরা এলোপাতাড়ি কোপায় হুমায়ুন আজাদকে। তবে চাপাতির আঘাতে রক্তাক্ত হয়েও প্রাণে বেঁচে যান অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, বহুমাত্রিক লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই।
২০ বছর আগে এই দুই জঙ্গি নেতার নির্দেশে আতাউর রহমান সানির নেতৃত্বে মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ, আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগনে শহীদ, নূর মোহাম্মদ ওরফে শামীম, হাফিজ মাহমুদসহ অন্যরা হুমায়ুন আজাদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।
মামলার নথি, অভিযোগপত্র ও দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া দুই আসামি হলেন মিজানুর ও আনোয়ারুল।
সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান তার অভিযোগপত্রে বলেন, ঘটনার দিন জেএমবি নেতা আতাউর রহমান সানির নেতৃত্বে মিজানুর রহমান মিনহাজ একটি চাপাতি নিয়ে, জেএমবির ‘কিলিং স্কোয়াডের সদস্য’ নূর মোহাম্মদ ওরফে শামিম কাঠের বাটওয়ালা সামনের দিকে তিনটি ছিদ্রযুক্ত ছুরি নিয়ে, ভাগ্নে শহিদ ও নুরুল্লাহ হাফেজ বোমা নিয়ে রাত ৮টার দিকে বাংলা একাডেমির উল্টো দিকে অবস্থান নেয়।
এরপর রাত সোয়া ৯টার দিকে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ বই মেলা বের হয়ে পায়ে হেঁটে পূর্বপাশের ফুটপাত দিয়ে টিএসসির দিকে যাওয়ার সময় আক্রান্ত হন।
ওই হামলার পর হুমায়ুন আজাদ ২২ দিন সিএমএইচে এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ১২ আগস্ট তিনি মারা যান।
ঘটনায় পরদিন তার ছোট ভাই মঞ্জুর কবির বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পরে তা হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। এছাড়া একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনেও অপর একটি মামলা হয়।
২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আল-মামুন হত্যা মামলায় ৪ জঙ্গিকে ফাঁসির রায় দেন। তবে আসামিদের আপিলে এই রায় কার্যকরের বিষয়টি উচ্চ আদালতে ঝুলে গেছে।
এদিকে, প্রতি বছরের মতো এবারও ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় হুমায়ুন আজাদ দিবস পালন উপলক্ষে লেখক-প্রকাশক পাঠক ফোরামের উদ্যোগে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে (বর্ধমান হাউজের সামনে) তথ্য কেন্দ্রের সামনে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।
এবারের প্রতিবাদ্যের বিষয় একুশের বইমেলা হোক প্রকৃত সৃজনশীল লেখক-প্রকাশকদের। স্মরণসভায় জাতিসত্তার কবি, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, মৌলি আজাদসহ লেখক প্রকাশক পাঠক উপস্থিত থাকবেন।
সারাবাংলা/এমও