Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চক্রান্ত পেরিয়ে পঞ্চম দফায় এসেছি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫০ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৭

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। দলের নেতাকর্মীরাই মানবঢাল বানিয়ে বাঁচিয়ে দিয়েছে। আমি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারি তার জন্য অনেকরকম চক্রান্ত হয়েছে। তারপরও পঞ্চম দফায় এসেছি এবং বাংলাদেশটা বদলে গেছে। দেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। এবং সংগ্রামের পথ বেয়েই আমরা মুক্তি অর্জন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আজকে অনেকেই তো হত্যা হলে বিচার চায়। আমার প্রশ্ন হলো- আমরা যারা ১৫ আগস্ট আপনজন হারিয়েছিলাম আমরা তো বিচার পাইনি। ৩৫ বছর সময় লেগেছে সেই বিচার পেতে। সেটাও আমরা যখন সরকারে আসতে পেরেছি তখন করতে পেরেছি, তার আগে না।’

তিনি বলেন, ‘আজ যারা মানবাধিকারের কথা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন, তাদের বিবেক কোথায় ছিল? তাদের সেই গলার স্বর কোথায় ছিল? আমরা তো দুয়ারে দুয়ারে কেঁদে ফিরেছি। এমনকি যখন বিচার শুরু করলাম সাজাপ্রাপ্ত আসামি অথবা মামলার রায় হবে; রায়ের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। ২০০১ সালে আমরা সরকারে আসতে পারলাম না। বিএনপি ক্ষমতায় এলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোট চুরি করলে দেশের মানুষ মেনে নেয় না। যে কারণে ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন খালেদা জিয়া করেছিল সত্য; তবে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। মাত্র দেড় মাস ওই সংসদের আয়ুষ্কাল ছিল। ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া জনগণের রুদ্ররোষে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। এটা বোধহয় বিএনপির লোকেরা ভুলে যায়। ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া তার ক্ষমতা হারিয়েছিল জনগণের আন্দোলনের মুখে।’

বিজ্ঞাপন

পরে ২০০৬ সালে পুনরায় ১ কোটি ২৩ ভুয়া ভোটার বানিয়ে নিজেদের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন করে নির্বাচন করতে গেলে জনগণ তাদের প্রত্যাখান করে এবং সেই নির্বাচনও বাতিল হয়ে যায়- সে প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন তারা আমাদের আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে সরাবে? ইলেকশনের আগে ইলেকশন করতে দেবে না। আমরা ইলেকশন করে এসেছি। বাংলাদেশে পঁচাত্তর সালের পর থেকে যে কয়টা ইলেকশন হয়েছে তার মধ্যে যদি কোনো সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়ে থাকে সেটা ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। হাজার চেষ্টা করেও মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দেশে-বিদেশে নানা তদবির করেও জনগণকে ঠেকাতে পারেনি। জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা নতুন ভোটার ও নারী ভোটাররাও বেশি মাত্রায় এবার ভোট দিয়েছ। সেটাই সব থেকে বড় কথা।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘এখন আবার তাদের বড় বড় কথা শুনি। আন্দোলন করে সরকার হঠিয়ে দেবে। আর তার মধ্যে জামায়াত বিএনপি বুঝলাম! কিন্তু আমাদের কিছু বামপন্থী দল আছে; এখন তারাও লাফায়। তারাও আন্দোলন করবে, বিপ্লব করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত উন্নতি হয়েছে। একটা আদর্শ নিয়ে না চললে উন্নতি করা যায় না। আর এই আদর্শ আমাদের শিখিয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশে ফেব্রুয়ারি ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলেই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এই দেশের মানুষকে আরও উন্নত জীবন দিতে চাই। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে আরও উন্নত জীবন যাতে পায় সেই পরিকল্পনা নিয়েই কিন্তু আওয়ামী লীগ কাজ করে যায়। আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য কাজ করে বলে আস্থা-ভালবাসা-বিশ্বাস অর্জন করেছে। ফলে বারবার তারা আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করা। একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা উঁচু করে চলা এবং আদর্শ নিয়ে চলা।’ ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে হবে। আর সে পরিকল্পনাও আমরা তৈরি করেছি। আমরা যা কিছু করি পরিকল্পনা করে সুষ্ঠভাবে করি। কোনো অ্যাডহক বেসিসে কাজ করি না।’

২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করার পাশাপাশি ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি টানা মেয়াদে সরকার গঠন করে নির্বাচনি ইশতেহারে যা যা ওয়াদা জাতির সামনে করা করেছিলাম তার প্রতিটি ওয়াদা পূরণ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তরুণ সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভোগে নয়, ত্যাগেই সবচেয়ে বেশি আনন্দ ও অর্জন- এ কথাটা মনে রাখতে হবে। আর সেটা শিখিয়েছেন আমাদের লাখো শহিদ, শিখিয়েছেন ভাষা আন্দোলনের শহিদ; সেটা শিখিয়ে দিয়ে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। কাজেই তার আদর্শ নিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মো. নুরুল হুদা প্রমুখ। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শহিদ দিবস শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

রিশাদ-জাহানদাদে কুপোকাত সিলেট
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২১

আরো

সম্পর্কিত খবর