চট্টগ্রামে শ্রদ্ধায় স্মরণ একুশের বীর শহিদদের
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:১৪ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মাতৃভাষা বাংলার জন্য অকাতরে প্রাণ দেওয়া বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে চট্টগ্রামের মানুষ। একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে চট্টগ্রামের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার পর থেকেই নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে অস্থায়ী শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। বিভিন্ন সংগঠনসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের হাতে হাতে ছিল ফুল।
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’— শহিদ মিনার ঘিরে সমবেত কণ্ঠে ছিল কালজয়ী সেই গান। আবার অনেকে শুধু রাজনৈতিক স্লোগানই দিয়েছেন।
পুলিশের সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী শহীদ মিনারে প্রথম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় চসিকের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা মেয়রের সঙ্গে ছিলেন।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার অতিরিক্ত আইজি কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম এবং মহানগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মোজাফফর আহমেদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা ফুল দেন। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেসক্লাবসহ আরও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শহিদ মিনার সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর সেখানে মানুষের ঢল নামে।
শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক জাতিগোষ্ঠী স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে। কিন্তু ভাষার জন্য রক্ত দেওয়ার ইতিহাস অন্য কোনো জাতির নেই। একমাত্র বাঙালি জাতি মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে। এ ভাষাকে সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠা করাই হোক আমাদের একুশের অঙ্গীকার।’
বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম বলেন, ‘১৯৫২ সালের এ দিনে রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতির বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই আত্মত্যাগের অনুপ্রেরণায় ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। আমাদের শপথ হোক, বাংলা ভাষা কিংবা জাতিস্বত্তার বিরুদ্ধে কোনো আঘাত এলে আমরা যেন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে পারি।’
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘মাতৃভাষা বাংলার সর্বস্তরে প্রচলনের জন্য সরকার যে আইন করেছে এবং হাইকোর্ট যে রুল জারি করেছেন, তার আলোকে আমরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সরকারি দফতর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষা যেন প্রাধান্য পায় সে জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। সর্বস্তরে সাইনবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুনগুলো যেন বাংলায় লেখা হয়, সেটার উদ্যোগও আমাদের আছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের ভাষা শহিদদের স্মৃতি সংরক্ষণের বিষয়েও আমরা কাজ করছি।’
প্রতিবছরের মতো এবারও একুশের ভোরে শহিদ মিনার অভিমুখে প্রভাতফেরি হবে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশের প্রথম প্রহর চসিক মেয়র টপ নিউজ শহিদ মিনার