সেই ডিপো এখন অগ্নি নিরাপত্তার মডেল, পেল স্বীকৃতিও
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫১ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েও ঘুরে দাঁড়ানো বিএম কনটেইনার ডিপো জোরদার করেছে অগ্নি-সুরক্ষা ব্যবস্থা, যার স্বীকৃতিতে পেয়েছে ‘অগ্নি নিরাপত্তা অ্যাওয়ার্ড’।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘নবম আন্তর্জাতিক ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো ২০২৪’ অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটিকে পুরস্কৃত করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, শিল্প-আরএমজি এবং শিল্প সেক্টরের নিরাপত্তায় শ্রেষ্ঠত্বের অংশ হিসেবে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। বুয়েটসহ সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং দেশের প্রথিতযশা স্থপতিদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারক প্যানেল এ পুরস্কার চূড়ান্ত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইলেকট্রনিক সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইসাব) স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপোকে এ স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছ থেকে সেফটি অ্যাক্সিলেন্স ট্রফি নেন স্মার্ট গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন মাইনুল আহসান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন ও বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিন হেলালী।
২০২২ সালের ৪ জুন দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর সেখানে কয়েক দফা বিস্ফোরণ ঘটে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নেভানো হয়।ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আহত হন প্রায় দুই শতাধিক।
ভয়াবহ ওই ঘটনায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ডিপোটিকে সংস্কারের মধ্য দিয়ে আরও আধুনিকায়ন করে মালিকপক্ষ। অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থারও আধুনিকায়ন করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘটনার ২০ মাস পর ডিপোটিতে এখন সাধারণ ফায়ার ডিটেকশন, ফায়ার হাইড্রেন্ট ও স্প্রিংকলার সিস্টেম ছাড়াও ডিপোর ২৪ একর ইয়ার্ড এবং ওয়্যারহাউজ এলাকা জুড়ে অ্যালকোহল প্রতিরোধী ফোম ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম সংযুক্ত করা হয়েছে। সবধরনের বিপজ্জনক পণ্য হ্যান্ডলিং করার জন্য আইএমডিসি কোড অনুসারে রাসায়নিক সুরক্ষা বাড়াতে ডিপোর ওয়্যারহাউজগুলোতে ৩০০টি রাসায়নিক ডিটেক্টরও ইনস্টল করা হয়েছে। বর্তমানে ডিপোতে একজন ফায়ার ও সিভিল ডিফেন্স অথরিটির সাবেক কর্মকর্তার নেতৃত্বে নিজস্ব ফায়ার ব্রিগেড রয়েছে। স্মার্ট গ্রুপ রাসায়নিক, পলিমার এবং এলপিজি শিল্পের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাপকে আধুনিকরণের জন্য বিদ্যমান ফায়ার হাইড্রেন্ট সিস্টেমের পাশাপাশি অ্যালকোহল প্রতিরোধী ফোম সিস্টেম ইনস্টল করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিএম কনটেইনার ডিপোর নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন মাইনুল আহসান বলেন, ‘অগ্নি দুর্ঘটনার পর নতুন লে-আউটে পুরো ডিপোটি আধুনিকায়ন করা হয়েছে। সার্ভিস ও কোয়ালিটির দিক থেকে এই ডিপোটি বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার মডেল ডিপো হিসেবে সামনে থাকবে। একটি ভিশন নিয়ে আমরা এগুচ্ছি। ইতোমধ্যে তার এই ভিশন বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তা, টিমওয়ার্ক, কাস্টমার ভেল্যু বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়েই কাজ করছি, যার স্বীকৃতিও মিলেছে।’
সারাবাংলা/আরডি/একে