এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:০৫ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো : নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সরকারি অনুদানের চেক বিতরণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাউদ্দিন এ আদেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী তারিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়ের করা মামলায় সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুকে আদালতে হাজিরের জন্য সমন জারি করা হয়েছিল। আজ (বৃহস্পতিবার) হাজিরের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তিনি হাজির না হওয়ায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। ১২ মে এ মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।’
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী, খুলশী, হালিশহর) আসনে মহিউদ্দিন বাচ্চু ৫৯ হাজার ২৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
নির্বাচনের নয় দিন পর গত ১৬ জানুয়ারি ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে আদালতে মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। আদালত মামলা গ্রহণ করে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সংসদ নির্বাচনের প্রচার চলার সময় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মহানগরের আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে চিঠি দিয়ে বাচ্চুর বিরুদ্ধে টাকা বিলির অভিযোগ আনেন বাচ্চুর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মনজুর আলম।
এতে বলা হয়, ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজের আগে তখনকার একাদশ সংসদের সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু চট্টগ্রাম-১০ আসনের সব মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের ব্যক্তিগতভাবে এক হাজার টাকা করে দেন।
এছাড়া ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডের মাদানি মসজিদে এক লাখ টাকার একটি চেক দেন, যা ওই মসজিদের ইমাম জুমার নামাজের আগে খুতবায় মুসল্লিদের অবহিত করেন।
একইভাবে গত ২৪ ডিসেম্বর লালখান বাজারে তার প্রধান নির্বাচনি কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সকল মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ৬০ হাজার টাকা করে ‘সরকারি’ অনুদানের চেক বিতরণ করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা এম মনজুর আলমের অভিযোগ তদন্তের জন্য নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে পাঠান। কমিটির তলবে মহিউদ্দিন বাচ্চু গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতিনিধির মাধ্যমে অভিযোগের জবাব দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব অনুদান সরকারিভাবে বরাদ্দ হওয়া বলে তিনি দাবি করেন।
কিন্তু নির্বাচনি আচরণ বিধিমালার ৩ ধারা অনুসারে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষ থেকে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে চাঁদা বা অনুদান দিতে বা দেওয়ার অঙ্গীকার করতে পারবেন না।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ৪ জানুয়ারি প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে অ-আমলোযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অভিযোগ দায়েরের জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু মামলাটি দায়ের হয়েছে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম