Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফুলের দোকানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার ৩ সাংবাদিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৪১ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৩:৪৬

মারধরের শিকার ইমদাদুল আজাদ। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা দোকানগুলোতে সংবাদ সংগ্রহের কাজে গিয়ে ককর্মচারীদের হাতে হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিন সংবাদকর্মী। তাদের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শাহবাগের পাইকারি ফুলের দোকান মালিক সমিতির নেতা শেখ মো. মেরিনের ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপে এ ঘটনাটি ঘটে।

মারধরের শিকার তিন সংবাদকর্মী হলেন— নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, রেডিও টুডের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. ইমদাদুল আজাদ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাসেল সরকার।

তাদের মধ্যে ইমদাদুল আজাদের ডান চোখের দুই পাশে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেটে গেলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হয়েছে।

ঘটনার ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছেন। এতে সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ছয়-সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন— পায়েল (৩৫), সাল্লু (২৭), আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), বুলু (৩২), দিদার (৩১), বাবু (৩০) ও জাহাঙ্গীর (৩২)। তারা সবাই শাহবাগ ফুল মার্কেটের কর্মচারী।

ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে নিউজবাংলা টুয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাবি প্রতিবেদক মনিরুল ইসলাম ও বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাবি প্রতিনিধ রাসেল সরকার পহেলা ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে ফুল বেচাকেনার চিত্র জানতে শাহবাগ মোড়ের ফুল মার্কেটে যান। ফুলের দাম বেশি কেন— ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপে কর্মরত পায়েলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে দুই ঢাবি প্রতিনিধিকে ‘ভুয়া সাংবাদিক’ বলে অভিহিত করেন। প্রতিবাদ করলে পায়েল উত্তেজিত হয়ে মনিরুলকে মারধর করতে শুরু করেন। এ সময় আশপাশের দোকানের কর্মচারীরাও তাদের সঙ্গে মারধরে যুক্ত হন এবং তারা রাসেলকেও মারধর করেন।

বিজ্ঞাপন

মারধরের শিকার তিন সংবাদকর্মী জানান, খবর পেয়ে আরেক সংবাদকর্মী ইমদাদুল আজাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে ফুলের দোকানের কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও মারধর করেন এবং হুমকিধমকি দেন। পরে তিন সংবাদকর্মী ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় তারা ফের পেছন থেকে তাদের ওপর হামলা করেন। এ সময় ইমদাদুল আজাদকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর করলে চোখে আঘাত পান তিনি। পাশেই পুলিশ অবস্থান করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।

এ ঘটনা জানতে পেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় সেখানে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তারা বলছেন, একপর্যায়ে সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য এক ঢাবি শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং দোকানিদের হামলা ও ফুটপাত দখল করাকে বৈধতা দিতে থাকেন।

পরে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলায় অভিযুক্তকে ধরে থানায় নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

মারধরের শিকার ইমদাদুল আজাদ বলেন, নিউজবাংলার ঢাবি প্রতিনিধি মনিরুল ভাইকে মারধর করা হয়েছে শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বিডিনিউজের রাসেল ভাই সেখানেই ছিলেন। সারাবাংলা ডটনেটের ঢাবি প্রতিনিধি রাহাতুল ইসলাম রাফি ভাইও আমার মতো খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন। ঘটনা সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করছিলাম। এরকম সময় মনিরুল ভাইকে মারধর করেছিলেন যিনি, তিনিসহ আরও কয়েকজন এসে আমাদের ওপর হামলা করেন। আমাকে তারা এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকেন। তাদের একজনের ঘুষিতে আমার চশমা ভেঙে যায়। তাদের মারধরে আমার চোখের দুই পাশে কেটে গেছে। পরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

বিজ্ঞাপন

রাহাতুল ইসলাম রাফি বলেন, মনিরুলকে মারধরে মূল অভিযুক্ত পায়েল পাশের খাবারের দোকানের দিকে চলে যাচ্ছিল। আমরা তার গতিবিধি দেখে ফেরত আসার সময় ওই দোকানের ভেতরে ওই পায়েলের নেতৃত্বেই সাত-আটজন মিলে আমাদের মারধর করেন। এদের মধ্যে ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপ এবং ওই খাবারের দোকানের কর্মচারীদের আঘাতে ইমদাদুল আজাদের চোখের দুই পাশে কেটে গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপের মালিক মো. মেরিন শেখ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ঢাকা বাইরে আছি। শুনেছি দোকানে ঝামেলা হয়েছে। আমাদের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।

জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, শাহবাগ মোড়ের ফুল মার্কেটে কয়েকজন সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। তারা অভিযোগ দিয়েছেন। শিগগিরই মামলা হবে।

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

টপ নিউজ ঢাবি শিক্ষার্থী মারধরের শিকার সাংবাদিক শাহবাগ ফুল মার্কেট সাংবাদিক আহত

বিজ্ঞাপন

রিশাদ-জাহানদাদে কুপোকাত সিলেট
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২১

আরো

সম্পর্কিত খবর