Saturday 18 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সসীমা নির্ধারণে আপিলের অনুমতি পেল রাষ্ট্রপক্ষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০০:৫৯ | আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০২:০২

ঢাকা: মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করে সরকারের জারি করা তিনটি গেজেট ও পরিপত্র অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশও দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন (লিভ টু আপিল) গ্রহণ করে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

আদালতে আবেদেনর পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন ও ওমর সাদাত।

মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাস ও ১৩ বছর নির্ধারণ নিয়ে করা পৃথক ১৫টি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৯ মে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করে সরকারের জারি করা তিনটি গেজেট ও পরিপত্র অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। ওই রায়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮-এর সংজ্ঞা সংক্রান্ত ২ ধারার ১১ উপধারা অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া রায় পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধদের সম্মানি পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) লিভ টু আপিল করে।

হাইকোর্টের রায়ের পর আইনজীবী ওমর সাদাত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছিলেন, কোনো রকম কারণ দর্শানের নোটিশ ছাড়াই তাদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাদের অমুক্তিযোদ্ধা বলা হয়। বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের বয়স ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১২ বছর ৬ মাস হয়নি তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবে না বলে জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

ওই আইনজীবী বলেন, আমরা সব আইন-কানুন আদালতের সামনে পেশ করি, কোর্ট সবকিছু দেখে রায় দিয়েছেন। সংবিধান ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণেও দেখবেন, তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধ ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছিলেন। সেখানে বয়সের কোনো বিধান ছিল না। মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম লালু বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ১০ বছর। বঙ্গবন্ধু তাকে কোলে তুলে নিয়েছিলেন এবং বীর প্রতীক খেতাব দিয়েছিলেন। সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে তিনি বীর প্রতীক তো ননই, তিনি আজ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও বিবেচিত হবেন না।

এর আগে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর ‘মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা ও বয়স নির্ধারণ’ করে গেজেট জারি করা হয়। ওই গেজেটে বলা হয়, ‘মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তারিখে ন্যূনতম ১৩ বছর হতে হবে।

এরপর ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি এক পরিপত্রের মাধ্যমে সে গেজেট সংশোধন করে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১২ বছর ছয় মাস।

ওই দুটি গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা হাইকোর্টে পৃথক পৃথক রিট দায়ের করেছিলেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর