বাড়তে বাড়তে সেঞ্চুরি ছাড়াল পেঁয়াজ
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৫৪ | আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৫৫
ঢাকা: প্রতিদিনই দাম বাড়ছে পেঁয়াজের। সবশেষ তিন দিনের প্রতিদিনই কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা করে। তাতে গত সপ্তাহের ৮০ টাকা থেকে এ সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম শতক ছাড়িয়েছে। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি দরে।
পেঁয়াজের এই ঝাঁঝে নাকাল হতে হলেও সরবরাহ ভালো থাকায় রাজধানীর বাজারে সবজির দাম এখনো কিছুটা কমের দিকেই। সে খুশি আবার উধাও হয়ে যাচ্ছে আমিষের বাজারে গিয়ে। কারণ মাছ-মাংস দুইয়ের দামই বাড়তি।
মহাখালী এলাকার আরজত পাড়া বউবাজারে বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, সিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কড়রলা ৮০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা, আলু ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা ও শশা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এই বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১২০ টাকা কেজি দরে।
বিক্রেতারা জানালেন, পেঁয়াজ ১২০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা, আদা ২৩০ টাকা ও আলু ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি এখন ৪৫ টাকা।
এই বাজারের বিক্রেতা আমিন বলেন, গত তিন দিন ধরে প্রতিদিনই পেঁয়াজে দাম কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়েছে। আমরা বেশি দামে কিনে এনে বেশি দামে বিক্রি করছি। তবে সবজির দাম কিছুটা কম।
আরেক বিক্রেতা আব্দুর রহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকালও (বৃহস্পতিবার) পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। কিন্তু কারওয়ান বাজার থেকে আজ কিনতেই হয়েছে ১১০ টাকায়। তাই ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। পরশু কিনেছিলাম ৯২ টাকা কেজিতে। তখন বিক্রি করতাম ১০০ টাকায়।’
পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুম এখন শেষ। বেশির ভাগ এলাকার কৃষক ওই পেঁয়াজ তুলে ফেলেছেন। অন্যদিকে হালি পেঁয়াজের ভরপুর মৌসুম শুরু হতে আবার কিছুদিন বাকি রয়েছে। মাঝখানের এই সময় চলছে সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে বাজারে দাম বাড়ছে।
কাওরান বাজারে পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী গফুর মন্ডল সারাবাংলাকে বলেন, গত বুধবার রাতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৮ থেকে ৮২ টাকা। বৃহস্পতিবার সকালেই কেজিতে ১৫ টাকার মতো দর বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৯৩ থেকে ৯৭ টাকা পর্যন্ত দরে।
দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজে স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ হয় না। এ কারণে প্রতিবছরই পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। কিন্তু এখন পেঁয়াজ আমদানি করে ব্যবসায়ীদের ‘পোষাচ্ছে না’ বলে জানালেন শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ। তিনি বলেন, ডলারের দামের কারণে অন্য দেশ থেকে আমদানি করলে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে যায় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ ও মুনাফা হিসাব করলে ১০০ টাকার কাছাকাছি খরচ পড়ে যায়। ফলে পেঁয়াজ আমদানি করলে এখন লোকসানের মুখে পড়তে হয়।
সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন আব্দুল মাজেদ। বলেন, হালি পেঁয়াজ উঠতে আরও এক থেকে দেড় মাস লাগতে পারে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত ভারত থেকে পেঁয়াজ আনার উদ্যোগ নেওয়া। কারণ ভারত থেকে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব। এটা করলে আর বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি থাকবে না। দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এদিকে বাজারে কমেনি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে আরও ১০-১৫ টাকা কম ছিল। একইভাবে ২১০ টাকা থেকে কিছুটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি ২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর
খাদ্যপণ্য ঢাকার বাজার নিত্যপণ্য পেঁয়াজের দাম বাজারদর সবজির বাজার