১ম বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি ১০০ টাকা, চতুর্থ বিয়েতে ৫০ হাজার
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫০ | আপডেট: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৬
ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় বিয়ে করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন রেজিস্ট্রেশেন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম বিয়ে বা স্ত্রীর মৃত্যুর পর বিয়ে করতে লাগবে ১০০ টাকা আর চতুর্থ বিয়ের ক্ষেত্রে লাগবে ৫০ হাজার টাকা।
আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬ এর ১০ (৪) এর ১৫২ নম্বর ক্রমিক অনুযায়ী, প্রথমবার বিয়ে করতে স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা, প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে ২য় বিবাহের ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকা, প্রথম দুই স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে ৩য় বিয়ের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা, প্রথম তিন স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে ৪র্থ বিয়ের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা এবং প্রথম স্ত্রী যদি মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা বন্ধ্যা হয় (সেক্ষেত্রে ক, খ, গ ও ঘ এ বর্ণিত কর প্রযোজ্য হবে না) তাহলে পরবর্তী বিয়ের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা বিবাহ কর করপোরেশনের রাজস্বে জমা দিতে হবে।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৮২ নম্বর ধারার ৪র্থ তফসিলের ৮ নম্বর ক্রমিকে অর্পিত ক্ষমতাবলে এবং আদর্শ কর তফসিল ২০১৬ এর ১০ (৪) এর ১৫২ নম্বর ক্রমিকে উল্লিখিত হারে এই কর আদায় করা হবে।
সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে বর্তমানে এ কার্যক্রম ম্যানুয়ালি পরিচালনা করা হলেও অতি দ্রুতই তা অনলাইনে নিয়ে আসতে এরইমধ্যে করপোরেশন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও বিবাহ নিবন্ধন কর পরিশোধ করা যাবে।
বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম শৃঙ্খলায় আনার লক্ষ্যে গত বছরের ৬ জুন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ঢাকা বিভাগীয় রেজিস্ট্রার, ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রার ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার, করপোরেশনের অধিক্ষেত্র এলাকাগুলোর কাজী, করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিবাহ বিচ্ছেদ সকলের কাছে অপ্রত্যাশিত একটি বিষয়। কিন্তু তারপরও বাস্তবতার নিরিখে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত তথ্যাদি করপোরেশনে আসলেও বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমাদের কাছে থাকে না। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী এটি বাধ্যতামূলক। এছাড়াও বিবাহ সংক্রান্ত তথ্য থাকলে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অনেক সময় তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি অনেক সময় বিজ্ঞ আদালত ও বিভিন্ন সংস্থা হতে এ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়। ফলে, আমাদের এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সামষ্টিকভাবে বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আসবে।’
শৃঙ্খলা আনয়নে এই কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী আরও বলেন, ‘অনেক সময় কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশান নির্ধারণে জটিলতা দেখা দেয়। তাছাড়া বিদেশগামী যাত্রীদের ও বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে অনেক সময় বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্যের সঠিকতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ রকম বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্যাদির গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও অনেক সময় বিদেশি দূতাবাসসমূহের বিবাহ সংক্রান্ত তথ্যাদির প্রয়োজন হয়। তাই, বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম লিপিবদ্ধ থাকলে তারাও সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে এ তথ্য পেতে পারে। সুতরাং, শৃঙ্খলা আনয়নে এ ধরনের কর্মকাণ্ড অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
উল্লেখ্য যে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এ লক্ষ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইলে মন্ত্রণালয় গত বছরের ১৩ মার্চ তারিখে আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬ এর ১০(৪) এর ১৫২ নম্বর ক্রমিকে বর্ণিত কর আদায়ে একটি পত্র প্রেরণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জানা যায় এরই মধ্যে করপোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড গত জানুয়ারি মাসে ২৮টি বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য ২ হাজার ৮ শত টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।
সারাবাংলা/আরএফ/একে