তাকসিম কেন বারবার ওয়াসার এমডি— কারণ জানালেন মন্ত্রী
২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:১৫ | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৩
ঢাকা: ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে তাকসিম এ খানের একাধিকবার নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তাকসিম এ খান ‘যোগ্য’ ও ‘কর্মঠ’ বলেই তাকে বারবার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
রোববার (২১ জানুয়ারি) কারওয়ান বাজারে ঢাকা ওয়াসা ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময়ে আমাকে শক্ত করে ধরেছে বর্তমান এমডি তাকসিম এ খানের বারবার দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে। প্রচুর সমালোচনাও হয়েছে। তারা বলেছেন, কেন বারবার ওয়াসা এমডি হিসেবে বর্তমান এমডি থাকেন। কেন এতবার তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে?’
সেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছি, ‘কোনো মানুষই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে একজন কর্মকর্তা ২০/৩০/৪০ বছর কাজ করে যাচ্ছেন। ওয়াসার এমডি যোগ্যতা ও সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছেন। নিজের যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার কারণে তিনি বারবার দায়িত্ব পেয়েছেন।’
মন্ত্রী বলেন,‘ রাজধানী ঢাকার উন্নয়নের দিকে দেখেই বিবেচনা করা হয় সে রাষ্ট্র কতটা উন্নত। সে কারণে ঢাকা ওয়াসাকেও এমন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখা আমাদের দায়িত্ব। এরইমধ্যে ঢাকা ওয়াসা তাদের গুণগতমান, অগ্রগতির দিক থেকে তার প্রমাণ দিয়েছে। ঢাকা ওয়াসা কোয়ান্টিটি, কোয়ালিটি রক্ষা করেছে পাশাপাশি নগরবাসীর চাহিদা পূরণ করেছে। এটি অবশ্যই আমাদের স্বীকার করতে হবে। তাদের অগ্রগতি অবশ্যই প্রশংসনীয়।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তাকর্মচারীরা তাদের এমডির নেতৃত্বে কাজ করে ঢাকা ওয়াসাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। পানির দাম নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার সময় আমি বলেছি, ঢাকা ওয়াসার পানি উৎপাদনের খরচ হয় ২৬ টাকা থেকে ৩০ টাকা। ৩০ টাকায যদি উৎপাদন খরচ হয় তাহলে সেটি যদি আমি ১৫ টাকায় বিক্রি করি, তাহলে বাকি ১৫ টাকার আমি কোথা দেব? এটি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সারা বাংলাদেশের মানুষের থেকে সরকার ট্যাক্সসহ বিভিন্ন খাত থেকে টাকা আহরণ করবে, আর সবার টাকা দিয়ে ওয়াসার পানির দাম না বাড়ানোর জন্য ভর্তুকি দিয়ে যাব তা তো হতে পারে না।’
অভিজাত এলাকার সেবার মূল্য বেশি হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একজন মানুষ গুলশানে বসবাস করে সেখানে তার প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা খরচ হয়, আর যদি ওয়াসার পানির দাম মাসে ১০০/২০০ টাকা বেড়ে যায় তাহলে গুলশানের মানুষের এটি সহ্য হবে না। তাহলে কি গরিব মানুষের থেকে টাকা এনে সরকার গুলশানের মানুষের জন্য পানিতে ভর্তুকি দেবে? তাহলে গরিব মানুষের প্রতি যে আমাদের কমিটমেন্ট আছে তার কী হবে? গরিবের টাকায় ধনীদের ভর্তুকি দিয়ে যাব তা তো হতে পারে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ওয়াসার নিজেদের মধ্যকার কোনো দুর্নীতির কারণে যদি পানির দাম বাড়ে তাহলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু গরিব মানুষের টাকা এনে সেই টাকা থেকে ওয়াসার পানির দাম কম রাখার জন্য ভর্তুকি দেওয়া হবে না। পাশাপাশি ওয়াসার পানির গুণগত মান আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদেরকে কাজ করে যেতে হবে।’
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সুজিত কুমার বালাসহ ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরএফ/একে