‘মনে হচ্ছে সরকার ধাওয়া খেয়ে প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াচ্ছে’
১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৮ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩৫
ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সরকারের উদ্ভট কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে পেছন থেকে কেউ ধাওয়া করছে আর তারা প্রাণ বাঁচাতে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াচ্ছে। ভোট গণনা শেষ না হতেই ডামি এমপিদের নামে গেজেট, শপথ গ্রহণ, মন্ত্রিপরিষদের নাম ঘোষণা, শপথ— চার দিনেই অভাবনীয় দ্রুততায় বিশ্ব রেকর্ড গড়ে যেন বিপদমুক্ত হলেন শেখ হাসিনা।‘
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার অপরিসীম ক্ষমতায় আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি, সংবিধান, শৃঙ্খলা- সবকিছু পদতলে পিষ্ট করে দেশে জংলি শাসন কায়েম করেছেন। তার বক্তব্য ভ্রান্ত ও মিথ্যা তথ্যের সমষ্টি ছাড়া কিছুই না।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে মনে হচ্ছে অস্থির। তাড়াহুড়ো করে শপথ নিতে গিয়ে আইন-কানুন ও সংবিধানের কবর রচনা করা হয়েছে। সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি আগে ভেঙে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেননি, তার মানে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত একাদশ সংসদের যারা সংসদ সদস্য ছিলেন, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন।’
রিজভী বলেন, ‘দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এই মুহূর্তে দেশে মিডনাইট একাদশ সংসদের ৩৫০ জন আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মিলে মোট ৬৪৮ জন শপথবদ্ধ এমপি রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সংসদ ডাকলে দুই সংসদের সদস্যরাই তাতে যোগ দিতে পারেন। অথচ এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। আগামী ২৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়া অবধি এই অরাজকতা থাকবে। এটি একটি চরম সাংবিধানিক লংঘন। গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে এই সময়ের মধ্যে দ্বাদশ অবৈধ সংসদ বাতিল করে দিতে পারে উচ্চ আদালত।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দুটি সংসদ বহাল অর্থাৎ প্রতি আসনে এখন দু’জন করে এমপি! সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ বানিয়েছেন শেখ হাসিনা। সংবিধান বিচ্যুত অবৈধ পন্থায় অবৈধ শপথে অবৈধভাবে জন্ম নেওয়া অবৈধ সংসদের অবৈধ কার্যক্রম এবং অবৈধ মন্ত্রী পরিষদের কোনো অন্যায্য আদেশ, নির্দেশ দেশের জনগণ মানতে বাধ্য নয়। এই কারণেই আওয়ামী লীগের গোটা শাসনামল দুর্নীতি, মহা হরিলুট, মহা সম্পদ পাচার ও মহা মাফিয়া চক্রকবলিত।’
রিজভী বলেন, ‘দেড় দশক ধরে দেশের ভোট বঞ্চিত মানুষের প্রাণ মৌলিক দাবি- নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন। কিন্তু শেখ হাসিনা ও তার লুটেরা পারিষদবর্গ সংবিধানের দোহায় দিয়ে একটির পর একটি বিনা ভোট, নিশি ভোট, ডামি নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে দেশে জংলী শাসন কায়েম করেছে।’
কর্মসূচি
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে, বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় রমনার ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স—বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা, শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়ার মাজারে ফাতেহা পাঠ ও পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতা ও নেতা-কর্মীরা।
এছাড়া পোস্টার এবং পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। দলের অঙ্গ, সহযোগী ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন নিজ নিজ সুবিধা অনুযায়ী আলোচনা সভা ও শীতবস্ত্র বিতরণ করবে। বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো আলোচনা সভাসহ অন্য কর্মসূচি পালন করবে।
সারাবাংলা/এজেড/এমও