অবাধ খোলাবাজার নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: সিপিবি
১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৪ | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:২৬
ঢাকা: চালসহ নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। বাজারে মুনাফাশিকারি লুটেরাদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ খর্ব না করা গেলে এবং অবাধ খোলাবাজার অর্থনীতির দর্শন ও মার্কেট ফান্ডামেন্টালিজম নীতি থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলেও মনে করছে দলটি।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) এক যৌথ বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা এ কথা বলেন। পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বিবৃতিতে সই করেছেন।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, বিশেষত দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের জন্য স্থায়ী র্যাশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এই দরিদ্র মানুষদের জন্য র্যাশনে নিয়ন্ত্রিত দামে কন্ট্রোল দামে চাল, গম, তেল, ডাল, চিনি ও প্রয়োজনমতো অন্যান্য অত্যাবশক পণ্য সাপ্তাহিক ভিত্তিতে দিতে হবে। পর্যায়ক্রমে পণ্যের সংখ্য বাড়াতে হবে।
সিপিবি নেতারা বলেন, সারাদেশে ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু এবং ক্রেতা-সমবায় সমিতি সংগঠিত করে দেশব্যাপী তার বিপণন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হব। মধ্যস্বত্বভোগীদের শোষণ থেকে উৎপাদক কৃষক ও ক্রেতাদের মুক্ত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর সহায়তায় একদিকে ভোক্তা সমবায় সমিতি, অন্যদিকে উৎপাদক সমবায় সমিতি গড়ে তোলা এবং এই দুই সংস্থার মধ্যে সরাসরি সংযোগ ও লেনদেনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা উল্লেখ করেন, দুর্নীতিমুক্ত ও দক্ষভাবে বিএডিসির কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করে সারাদেশে সার, বীজ, কীটনাশক, বিদ্যুৎ সেচ যন্ত্রপাতিসহ কৃষি উপকরণ ন্যায্য মূল্যে এবং সময়মতো খোদ কৃষকের কাছে সরাসরি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে, যেন পণ্যের উৎপাদন ব্যয় কমে আসে।
বিবৃতিতে বলা হয়, পণ্য পরিবহনে দুর্নীতি, হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধ এবং একইসঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধনসহ হাটবাজারে ইজারাদারি ব্যবস্থা ও তোলা আদায়ের অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতিমুক্তভাবে টিসিবির কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে অত্যাবশ্যক পণ্যসামগ্রীর আমদানি, মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতে হবে। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে খাদ্যদ্রব্যসহ অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যসামগ্রীর বাফার স্টক গড়ে তুলতে হবে।
পাইকারি ও খোলাবাজারে পণ্যমূল্য তদারকির জন্য ‘মূল্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ’ (প্রাইস রেগুললেটরি অথোরিটি) প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি উপযুক্ত ক্রেতাস্বার্থ সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন ও কার্যকরের ব্যবস্থা নিতে হবে। আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস), মার্কেটিং অপারেশন, টেস্ট রিলিফ, কাজের বিনিময় খাদ্য (কাবিখা) প্রভৃতি কর্মসূচিসহ যেকোনো আপৎকালীন দ্রুততার সঙ্গে ঝটিকা কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতি রাখা, ফ্যমিলি কার্ডের সংখ্য বাড়ানো ও দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে।
সিপিবি বিবৃতিতে বলছেম, পৃথক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মাধ্যমে গ্রাম-শহরসহ সারাদেশে সাশ্রয়ী, দক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত গণবণ্টন ব্যবস্থা (পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম) চালু করতে হবে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে রাষ্ট্রের প্রভাব-সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে এ বাজারগুলোতে প্রত্যক্ষ রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের উপযুক্ত ব্যবস্থা ও কার্যক্রম চালু করতে হবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর