‘ভোটকেন্দ্রে না গেলে ‘ভাতা কার্ড’ বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে’
২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:২২ | আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০২:৫৮
ঢাকা: ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে না গেলে তাদের ‘ভাতা কার্ড’ বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিন এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বের চোখে ধুলো দিতে ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য অসহায় ভোটারদের বাধ্য করতে এক অভিনব অমানবিক নির্যাতনের পন্থা প্রয়োগ করছে সরকার। পত্র পত্রিকায় প্রতিদিন খবর বেরুচ্ছে, গণভবনের নির্দেশেই সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় কার্ডের মাধ্যমে সুবিধাভোগী প্রায় দুই কোটি মানুষকে টার্গেট করেছে আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় অনুগত প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
তিনি বলেন, ‘উপকারভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সংশ্লিষ্ট কার্ড জমা নেওয়া হচ্ছে। যা ভোট প্রদান সাপেক্ষে ফেরত দেওয়া হবে। ভোট কেন্দ্রে না গেলে কার্ড বাতিলের হুমকী দেয়া হচ্ছে। ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘যশোর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ অনেক জেলায় ইতিমধ্যে বয়স্ক ভাতা, বিধবা বা স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য ভাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও সম্মানী ভাতা, ভিডব্লিউবি, ভিজিএফ, ভিজিডি, জিআর, টিআর, ওএমএস, টিসিবির সামাজিক সুরক্ষার উপকারভোগীদের কার্ড জমা নিয়েছে সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা। প্রায় প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় নৌকার প্রার্থীরা হুমকী দিচ্ছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি যারা ভোট কেন্দ্রে যাবে না তাদের সকল সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল মাগুরা-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীরেন শিকদারের প্রচার প্রচারণায় মাগুরার শালীখার শতখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার রহমান ঝন্টু মিয়া, জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষীরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী তারা, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ফিল্ড সুপারভাইজার আব্দুল হাকিম হুমকি দিয়ে বলেছেন, আমরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, কৃষকের মাঝে সার এবং বীজ বিতরণ করি। যারা ৩০ টাকা কেজিতে চাউল পায় তাদের সবাইকে আমি চিনি। তাদের সবাইকে ভোট সেন্টারে হাজির হতে হবে। ভোট কেন্দ্রে হাজির হতে না পারলে তার নামের পাশে লাল চিহ্ন পড়ে যাবে।’
রিজভী বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে নিজ নির্বাচনি প্রচারণাকালে একজন মন্ত্রী বলেছেন, বিএনপির কথা শুনে ভাতাভোগী কেউ ভোটকেন্দ্রে না এলে নির্বাচনের পর কার্ড বাতিল করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখন হত-দরিদ্র জনগণের খাবার অধিকারও ছিনিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু ভাতার মালিক আওয়ামী লীগ সরকার না। এর মালিক দেশের জনগণ। জনগণের টাকা এবং বিদেশিদের সহায়তায় গরিবের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়। এই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় কার্ডের মাধ্যমে সুবিধা প্রদান বিএনপির অবদান। দেশটা কারো পৈতৃক সম্পত্তি না, দেশের প্রতি সবার সমান অধিকার। গরীব মানুষের পেটে লাথি মেরে তার এই ভাতার পরিবর্তে নৌকায় ভোট দেওয়ার কর্মসূচির অধিকার কে দিয়েছে?
সারাবাংলা/এজেড/এনইউ