Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রতিদ্বন্দ্বীকে খন্দকার মোশতাক বলায় ইসিতে নদভীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৩১ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবদুল মোতালেবকে ‘বেঈমান, মোনাফেক’ ও খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর বিরুদ্ধে। স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেব বর্তমান সংসদ সদস্য নদভীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে নালিশ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) জেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৩ ডিসেম্বর লোহাগাড়া উপজেলার বার আউলিয়া কলেজের পাশে বাঙালিয়ানা নামে একটি রেস্তোঁরায় এক সভায় বক্তব্য দেন আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই বক্তব্যে দেখা যায়, তিনি আবদুল মোতালেব ও তার সমর্থকদের ‘বেঈমান, মোনাফেক ও খন্দকার মোশতাক’ উল্লেখ করে উসকানিমূলক, মানহানিকর ও চরিত্রহননমূলক কথাবার্তা বলেছেন। সভায় লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম ইউনুস, প্যানেল চেয়ারম্যান আক্কাস ও ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল নবী উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য দেন।

সাংসদ নদভী ও তার অনুসারীদের এসব বক্তব্য নির্বাচনকে প্রভাবিত করার শামিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া একই অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সাতকানিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় নদভীর স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে এবং একইদিন একইস্থানে লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি একেএম আসিফুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে নৌকা প্রতীকের নামে স্লোগান দেওয়া হয়। একইদিন নদভীর নেতৃত্বে মিছিলেও প্রতীকের নাম উল্লেখ করে স্লোগান দেওয়া হয়।

এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ অনুযায়ী রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১(ক) ও ১২নম্বর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এর মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেতে পারে বলে উল্লেখ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব।

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর হুমকিধমকি ও সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ এনে নদভীর বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নালিশ করেছিলেন মোতালেব। এর ভিত্তিতে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি নদভীকে শোকজের পর সতর্ক করেছিল।

মোতালেবের সর্বশেষ অভিযোগের বিষয়ে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রার্থী মোতালেবের অভিযোগ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী। ‘জামায়াত ঘরানার’ নদভীকে দলে এনে ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রথম মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ, যিনি ‘মধ্যপ্রাচ্য লবির’ জন্য আগে থেকেই পরিচিত ও আলোচিত। ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার’ নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ তাকে দলে নিলেও দলটির পোড়খাওয়া অনেক নেতাকর্মীই তাকে মেনে নিতে পারেননি। একাংশের বিরোধিতার মধ্যেই নদভী ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ‍দুই দফায় সাংসদ নির্বাচিত হন।

গত দশ বছরে সাংসদ হিসেবে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী’র বিভিন্ন কর্মকাণ্ড আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ‘জামায়াত তকমা’ ঘুচিয়ে এলাকায়-দলে প্রভাব-প্রতিপত্তি তৈরি করতে বিভিন্নসময়ে তার কর্মকাণ্ড বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ আছে, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত নিজের স্বজন ও অনুসারীদের তিনি আওয়ামী লীগে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যারা ছিলেন, তাদের কোণঠাসা করেছেন।

এর ফলে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকে পাশে নিয়ে গত দুই নির্বাচনে তিনি বৈতরণী পার হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নদভীকে ছেড়ে গেছেন। তার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নেমেছেন নির্বাচনের মাঠে।

সারাবাংলা/আরডি/একে

ইসি টপ নিউজ নদভী নির্বাচন কমিশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর