প্রাথমিকে ২৮৫ প্রতিবন্ধী প্রার্থীর নিয়োগের রায় ১৪ জানুয়ারি
১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:২৯
ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ২৮৫ প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায়ের জন্য আগামী ১৪ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। আর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ।
এর আগে ২৮৫ শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পৃথক চারটি রিটের রুল শুনানি একটি বেঞ্চে করার জন্য গত সপ্তাহে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী কোটায় বিভিন্ন উপজেলায় ১১৪ সহকারী শিক্ষক পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে প্রতিবন্ধী কোটায় কেন তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন। এরপর আরও ১৭১ প্রতিবন্ধী প্রার্থী পৃথক তিনটি রিট দায়ের করলে আদালত একইভাবে রুল জারি করেন।
রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে (ডিজি) বিবাদী করা হয়।
মো. মাহাবুব শেখ, মো. আবু জাহিদ, ফাহিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, পার্থ প্রতীম, শাজাহান শেখ, মো. মনোয়ার হোসেন, মো. আজিজুল ইসলাম, বৃষ্টি রানি রায়, মো. সাজ্জাদ হোসেন সাজু ও মো. নূর আলমসহ বিভিন্ন জেলার ২৮৫ জন প্রতিবন্ধী প্রার্থী চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে এই রিটগুলো দায়ের করেন।
মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, রিট আবেদনকারীরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর প্রকাশিত ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। পরে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন।
তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়, যেখানে কোনো প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। অথচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯-এর ৮-এর ২ বিধিতে বলা হয়েছে, ‘উপবিধি (২)-এর দফা (গ)-তে উল্লেখিত মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আপাতত বলবৎ অন্য কোনো বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোনো বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকলে ওই কোটা সংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে’। অন্যদিকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩-এর ধারা ৩৫-এর ১-এ বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী, উপযোগী কোনো কর্মে নিযুক্ত হতে কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তার প্রতি বৈষম্য করা বা তাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।’
এসব আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেই ২৮৫ প্রতিবন্ধী প্রার্থী হাইকোর্টে পৃথক চারটি রিট করেন। সেসব রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০-এর প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়া কেন অবৈধ হবে না এবং ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চান। সোমবার সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ১৪ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করলেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর