Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শাহজাহান ওমর শান্তির পক্ষে, তাই জামিন পেয়েছেন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:১৭ | আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:২১

ঢাকা: শাহজাহান ওমর শান্তির পক্ষে, তাই জামিন পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ক্ষমতাসীনরা যখন বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন, তখন বিএনপির অন্য নেতারা কারাগারে। আবার শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তাহলে বিচার বিভাগ স্বাধীন হয় কীভাবে?

এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা সহিংসতায় জড়িত, তারা গ্রেফতার হয়েছেন। সহিংসতা তো একজন কর্মী করেন, সেজন্য নির্দেশ দিতে হয়। ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো আর বিচারপতির বাসায় হামলা করেননি, তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। যিনি নির্দেশ দিয়েছেন তাকে কারাগারে থাকতে হবে। এটা না করলে দেশে আরও বেশি সন্ত্রাস হতো।

তিনি বলেন, শাহজাহান ওমর শান্তির পক্ষে, সহযোগিতা করছেন। কাজেই তিনি জামিন পেয়েছেন।

শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগ থেকে কেন নির্বাচন করছেন- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগের দরজা তো বন্ধ না। ১৯৭০ সালেও আমরা মুসলিম লীগের অনেক লোককে দলে নিয়েছি। মানুষ তার মতাদর্শ পরিবর্তন করেন, এটা সারা পৃথিবীতেই হয়। যুক্তরাজ্যে চার্চিলের মতো নেতাও দল পরিবর্তন করেছেন।

আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে শাহজাহান ওমরের সাবেক দল বিএনপি। গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বিকেলে তাকে ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। পরে তিনি নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ কী ৩০০ আসনে একাই লাড়বে, নাকি জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নেবে? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন। কাজেই এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাচ্ছি, সংসদে একটি বিশ্বাসযোগ্য বিরোধী দল থাকবে। যে কারণে আমরা কিছুটা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আমাদের অনেক সম্ভাবনাময়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তাদের মধ্যে যারা পাশ করে আসবেন, তারাও সংসদে ভূমিকা রাখবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

নিজেরা নিজেরা কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা চাই, যোগ্য, নিবেদিত, অঙ্গীকারাবদ্ধ কাউকে যেন জনগণ ভোট দেন। আমরা নৌকার প্রার্থী দিয়েছি, ভোট দিল না, এটা তো ভোটারদের পছন্দ। তারাই ঠিক করে দেবে।

বিএনপি যেখানে নির্বাচনে আসছে না, সেখানে আপনারা কী ভোটাদের অংশগ্রহণ পাবেন, প্রশ্নে তিনি বলেন, কেন পাব না? দুইজন যদি প্রার্থী হয়? আমাদের কাছে তথ্য আছে, আমাদের অনেক স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিযোগিতায় আছেন। তারা অনেক সম্ভাবনাময়ী। কাজেই আমাদের নৌকার প্রার্থীরাও নিজেদের প্রমাণ করে সংসদে আসুক যে তারা মানুষের জন্য ভালো কাজ করেছে, নিবেদিত ছিল।

৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ কী, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো বেশিরভাগ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এটি অস্বীকার করলে চলবে না যে বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, তারা এলে নির্বাচন আরও গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু তারা না এলে আমরা কী করবো, আমরা তো চেষ্টা করেছি, তাদের আনার জন্য। জাপানে ছোট্ট বিরোধী দল, কিন্তু বিরোধীদল তো আছে। বিএনপি নির্বাচনে না এলে আমাদের তো কিছু করার নেই। তাদের তো জোর করে নির্বাচনে আনতে পারি না।

বিজ্ঞাপন

এখন যারা প্রার্থী হচ্ছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রতীক নেওয়াই তাদের মূল উদ্দেশ্য, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ১৭ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর এ ব্যাপারে আমরা মন্তব্য করব।

হরতাল-অবরোধের পরেও কীভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে সহিংসতার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরাও চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা অনেক বেশি, তারা অনেক বেশি সুশৃঙ্খলা। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যে সহিংসতা হয়েছে, তার তুলনায় এখন অনেক কম। আমরা বিশ্বাস করি, আরও কয়েকদিন পর এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

আগে হরতালের একটি রিকশাও চলতো না, এখন বিদেশিরাও চলাচল করতে সাহস পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, হরতালের কোনো বাস্তবায়ন নেই। কারণ বিএনপির সঙ্গে জনগণ নেই, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা জানে, তাদের নেতা দেশের বাইরে, অপরোধের জন্য দলটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সাজাপ্রাপ্ত। কাজেই তারা নির্বাচনে আসতে চায় না।

প্রসঙ্গত, বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। নাশকতার মামলায় জামিন পেয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই ঝালকাঠি-১ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।

সারাবাংলা/জেআর/এনইউ

কৃষিমন্ত্রী জামিন টপ নিউজ শাহজাহান ওমর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর