সাংবাদিক লাঞ্ছনা: এমপি মোস্তাফিজুরকে তলব
৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো : আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার ঘটনায় চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানকে তলব করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। তাকে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার মধ্যে সশরীরে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রামে ‘নির্বাচন-পূর্ব-অনিয়ম’ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকল্পে গঠিত নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সালেম মো. নোমান বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে এ আদেশ দেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বাঁশখালী আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও তিনি এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাংবাদিককে ফোন করে গালিগালাজ, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্য, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, সাংসদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা, বাঁশখালীতে নিজ দলের বিরোধী নেতাকর্মীদের দমনপীড়ন, প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিলসহ নানা কারণে তিনি বারবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন।
এবার মনোনয়ন না পাওয়ার গুঞ্জনের মধ্যেই নৌকা প্রতীক পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান মোস্তাফিজুর রহমান। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তার সঙ্গে ঢুকে পড়েন এক ডজন নেতাকর্মী। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
এ সময় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদক রাকিব উদ্দিন আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাংসদ মোস্তাফিজুর রেগে যান। তিনি রাকিবকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরাও এ সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। ধাক্কাধাক্কিতে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কিছু সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মোস্তাফিজুর রহমান চলে যাওয়ার সময় তার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানাতে গেলে নেতাকর্মীরা তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন।
দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. শাহাবউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের ঘটনায় অনুপম শীল নামে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের একজন সাংবাদিক নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের স্বপক্ষে চার জন সাংবাদিক বক্তব্য পেশ করেছেন। এরপর কমিটির চেয়ারম্যান অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে আগামীকাল (শুক্রবার) বিকেল তিনটার মধ্যে এ বিষয়ে সশরীরে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখা দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
ইতোমধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয় থেকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম