হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন
৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৪ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১২:২৪
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিক্সন এবং ফোর্ড প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
কিসিঞ্জারের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থা কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জার্মান বংশোদ্ভূত প্রাক্তন কূটনীতিক যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে তার নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
কয়েক দশক দীর্ঘ কর্মজীবনে হেনরি কিসিঞ্জার মার্কিন পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে তার নীতি কখনও কখনও ইতিহাসের বিতর্কিত অধ্যায়েরও জন্ম দিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে শিথিল সম্পর্ক নীতির পথপ্রদর্শক। চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের সূচনাকারী। তিনি শেষ পর্যন্ত ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বের করার জন্য কৃতিত্বও পেয়ে থাকেন। এ জন্য তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। যদিও তার এই জয় নোবেল শান্তি পুরস্কারের ইতিহাসে অন্যতম বিতর্কিত। সমালোচকদের মতে, ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই অনেক দেরী হয়ে যায়, তাই কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
কিসিঞ্জারের সমালোচকদের মতে, তার নীতিগুলি কম্বোডিয়া এবং লাওসে ভারী বোমা হামলার জন্য দায়ী— যার ফলে অসংখ্য মানুষ মারা গেছে। চিলিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একজন নেতার ক্ষমতা গ্রহণও আটকে দিয়েছিলেন কিসিঞ্জার। পূর্ব তিমুর ও বাংলাদেশে গণহত্যা এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় গৃহযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য কিসিঞ্জারের গৃহীত নীতিগুলো দায়ী।
হেনরি কিসিঞ্জারের জন্ম ১৯২৩ সালে জার্মানির নুরেমবার্গে। তার মূল নাম হেইঞ্জ আলফ্রেড কিসিঞ্জার। ১৯৩৮ সালে নাৎসিদের ইহুদি নিধন অভিযান থেকে পালিয়ে তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি নাম পরিবর্তন করে ‘হেনরি’ রাখেন। একজন নতুন আমেরিকান নাগরিক হিসেবে তিনি তিন বছর মার্কিন সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপে যুদ্ধ করেন।
কিসিঞ্জার একজন হার্ভার্ড স্নাতক। তিনি সেখানে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট ডিগ্রিও অর্জন করেন।
আরও পড়ুন- ৭১’র গণহত্যার দায়ে কিসিঞ্জারের বিচার চায় নিউইয়র্কের শিক্ষার্থীরা
সারাবাংলা/আইই