যশোরে অপরিকল্পিত ৮ সেতুর কাজ ৩ মাসের জন্য স্থগিত
২৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:১৭ | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১১:২৩
যশোর: বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ছাড়পত্র না নেওয়া এবং নীতিমালা লঙ্ঘন করায় যশোরে ভৈরব নদীসহ পাঁচটি নদীতে নির্মাণাধীন আটটি সেতুর নির্মাণকাজ তিন মাসের জন্যে স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সামছুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।
রুলে বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র ছাড়া ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে যশোরের ভৈরব নদীসহ পাঁচটি নদীতে আটটি সেতুর নির্মাণ কাজ কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল বিভাগসহ (এলজিইডি) সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি ‘বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হচ্ছে সেতু’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেতুগুলো হলো— ভৈরব নদের ওপর ছাতিয়ানতলা, দাইতলা ও রাজারহাট সেতু, মণিরামপুরে মুক্তেশ্বরী ও শ্রী নদীতে দুটি সেতু, অভয়নগরের টেকা নদীতে একটি সেতু এবং শার্শার বেতনা নদীতে দু’টি সেতু।
পরে বিআইডব্লিউটিএ ছাড়পত্র ছাড়া ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে সেতু নির্মাণের অভিযোগ এনে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলন কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদের পক্ষে এলজিইডিসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট পাঁচটি দফতর বরাবরে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। ইকবাল কবির জাহিদের পক্ষে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সামছুল হক।
নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। তবে এলজিইডি যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, তারা কোনো আইনি নোটিশ পাননি।
এরও আগে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি ও ৫ এপ্রিল কম উচ্চতায় এসব সেতু নির্মাণ করায় বিআইডব্লিউটিএর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে উচ্চতা নিয়ে আপত্তি জানানোর পরও তা আমলে নেয়নি নির্মাণসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
পাশাপাশি এসব সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ করার জন্য ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো তা আমলে নেয়নি।
হাইকোর্টের আদেশের পর ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, নদী প্রবহমান করতে নদী সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু অপরিকল্পিত এসব সেতু নদী প্রবহমান করার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। আমরা বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি। ফলে প্রথমে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এরপর হাইকোর্টে রিট করা হয়। এখন উচ্চ আদালত এসব সেতুগুলোর নির্মাণ কাজ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর
অপরিকল্পিত ৮ সেতু’ অপরিকল্পিত সেতু টপ নিউজ নির্মাণকাজ স্থগিত যশোর হাইকোর্টে রিট