খননের সময় হেলে পড়েছে খালপাড়ের ৪ তলা ভবন
২৫ নভেম্বর ২০২৩ ২১:২১ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ২১:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে খালপাড়ে চারতলা একটি ভবন হেলে পড়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) খালটি খনন করছে। ভবনের লাগোয়া অংশ থেকে মাটি সরিয়ে নেওয়ার পর সেটি হেলে পড়েছে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার পশ্চিম শহীদনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, হেলে পড়া চারতলা ভবনটির মালিক নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার পশ্চিম শহীদনগর হাজী আব্দুল করিম সড়কের মোহাম্মদ খোরশেদুল আলমের স্ত্রী মোছাম্মৎ মিলি কাউছার। ২০০৫ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, হেলে পড়া চারতলা ভবন খোরশেদ ম্যানশনে সাতটি পরিবার বসবাস করতো। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এছাড়া পাশাপাশি পাঁচতলা একটি ও দ্বিতল আরেকটি ভবন থেকে ১৩ পরিবারকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া বায়েজিদ বোস্তামি ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভবনের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। এজন্য ভবনের ভিত নষ্ট হয়ে সেটি উত্তরদিকে কিছুটা হেলে পড়েছে। এখানে একটা খাল খননের কাজ চলছে। সেজন্য মাটি তোলা হচ্ছে। আমরা হেলে পড়া ভবনের সব বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছি। আরও দুটি ভবনের জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এসব ভবনের বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. বেলাল নামে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখানে যে খাল খনন করা হচ্ছে, এটার নাম শীতল ঝর্ণা খাল। কয়েকদিন ধরে এখানে মাটি তোলা হচ্ছে। খোরশেদ ম্যানশনের নিচের পিলার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিল আগেই। কিন্তু ভবনের মালিক এটা সিরিয়াসলি নেননি। আজ বিল্ডিংটা হেলে গেছে। পাশে যদি আরেকটি বড় ভবন না থাকতো, তাহলে ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারতো।’
নগরীর ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিডিএ শীতল ঝর্ণা খাল খনন করছে। গত পাঁচ বছর ধরে কাজ চলছে। যে ভবনটা হেলে পড়েছে সেটা একেবারে খালের সঙ্গে লাগোয়া। নির্মাণের সময় কোনো গাইড ওয়াল দেওয়া হয়নি। খালের মাটি তোলা শুরু হলে সেটি হেলে পড়ে।’
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘শীতল ঝর্ণা খাল খনন শুরুর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এ সময় চারতলা ভবনটির মালিক মিলি কাউছার লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, খাল খননের সময় নিজের সম্পদের নিরাপত্তার উদ্যোগ তারা নিজেরাই নেবেন। কোনো ক্ষতি হলে প্রকল্পের কাজে যুক্তদের কাউকে দোষারোপ করা হবে না।’ এ বিষয়ে ভবন মালিক মিলি কাউছারের বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে, ভবন হেলে পড়ার ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালককে প্রধান করে কমিটিতে সিএমপি, সিডিএ, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও গণপূর্ত বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সদস্য করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম