Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বুলবুল মহলানবীশ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য আমৃত্যু লড়েছেন’

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:২৫ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৩৫

ঢাবি: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত বুলবুল মহলানবীশ আমৃত্যু গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের গড়তে লড়াই করে গেছেন। বহু গুণে গুণান্বিত এই নারী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন দক্ষ সংগঠক, পরোপকারী ব্যক্তিত্ব।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রয়াত বুলবুল মহলানবীশের স্মরণে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী সেক্টর কমান্ডার ফোরামের নেত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশের প্রয়াণে স্মরণসভাটির আয়োজন করে সেক্টর কমান্ডার ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-’৭১ এর কেন্দ্রীয় নারী কমিটি।

স্মরণসভার শুরুতেই প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রয়াত বুলবুল মহলানবীশের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নেতারা। এরপর, শোকবার্তা পাঠ করেন সেক্টর কমান্ডার ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ-’৭১ এর কেন্দ্রীয় নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা নিরু। শোকবার্তা পাঠ শেষে সেটি প্রয়াত বুলবুল মহলানবীশের স্বামী সুরিত কুমার লালার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

স্মরণসভায় কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব হারুন হাবিব বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের মানুষেরা, যারা শুধু অস্ত্র দিয়ে নয়, কণ্ঠ, লেখা দিয়েও লড়াই করেছি, তাদের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে এবং সেটাই স্বাভাবিক। স্বাধীন বাংলা বেতারের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন বুলবুল মহলানবীশ। বুলবুল একজন দক্ষ সংগঠক ছিলেন।

তিনি বলেন, আমরা একবার শেরপুরের সোহাগপুরে বিধবাপল্লীতে গিয়েছিলাম। সঙ্গে বুলবুলও ছিলেন। কীভাবে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী প্রতিটি মানুষকে হত্যা করেছিলো, সে গ্রামের নারীরা তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। বুলবুল প্রত্যেকটি নারীকে সমবেদনা জানিয়েছেন। আমরা পাশে ওই নারীদের দাঁড়িয়েছিলাম। বুলবুল সেখানে পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

স্মরণসভায় বুলবুল মহলানবীশের স্বামী সুরিত কুমার লালা বলেন, মৃত্যুর আগের দুবছর খুব কষ্টে কাটিয়েছে সে। কথা জড়িয়ে যেত, লিখতে পারতো না, কোথাও যেভাবে যেতে পারতো না। তাই মাঝেমাঝে ভাবি, বুলবুল চলে গিয়ে ভালোই হয়েছে। আমি কোনোদিন ভাবতে পারিনি, একজন মানুষ চলে গেলে আরেকজন মানুষ কত একা হয়ে যায়! এটা আমি উপলব্ধি করেছি।

বুলবুল মহলানবীশের ঘনিষ্ঠজন কবি মোহন রায়হান বলে, গত ৪৭ বছর ধরে বুলবুল দি’র সঙ্গে সম্পর্ক। তিনি সবসময় গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। আজীবন এর জন্য লড়াই করে গেছেন। আমি ভাবতেই পারছি না, বুলবুল দি’ আজ আমাদের মাঝে নেই।

সভাপতির বক্তব্যে সেক্টর কমান্ডার ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ-’৭১ এর কেন্দ্রীয় নারী কমিটির সভাপতি লায়লা হাসান বলেন, সবার সাথেই বুলবুলের আত্মার সম্পর্ক ছিলো। তার মনটা ছিলো একেবারে স্বচ্ছ। গান, আবৃত্তি, নাটক সবকিছুতেই তার দখল ছিলো। বুলবুল যা রেখে গেছেন, তা আমাদের সম্পদ। আমাদের দায়িত্ব এগুলো ছড়িয়ে দেওয়া। তবেই আমরা স্বার্থক হবো।

স্মরণসভায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, বুলবুল মহলানবীশের বন্ধু ঝর্ণা রহমান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের উপস্থাপক আশরাফুল আলম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোয়ার হোসেন খান, কচি-কাঁচা মেলার সভাপতি রওশন আরা ফিরোজ, আবৃত্তিকার রূপা চক্রবর্তীসহ অনেকে।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক বুলবুল মহলানবীশ ইহলোক ত্যাগ করেন।

সারাবাংলা/আরআইআর/এনইউ

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ টপ নিউজ বুলবুল মহলানবীশ