‘যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে পোশাক খাতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই’
২১ নভেম্বর ২০২৩ ২০:১০ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০২
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পকে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কমনওয়েলথ প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তারের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের মন্তব্যের ব্যাখ্যা বাংলাদেশ চাইবে বলেও সাংবাদিকদের জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা পরবর্তী আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এটা জিজ্ঞেস করব। কল্পনা আক্তার বাংলাদেশে ২০১০ সালে একবারই গ্রেফতার হয়েছিলেন। তিনি একা নন, তার সাথে আরও একাধিক শ্রমিক নেতা চাকরিরত অবস্থায় আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাদের মামলাটি তুলে নেওয়া হয়।
কল্পনা আক্তার একবার যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হয়েছিলেন জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর পশ্চিমা দেশের কিছু ক্রেতা যখন ফ্যাক্টরিগুলোকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে, তখন কল্পনা আক্তার ও আরও দুই একজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেখানেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। কল্পনা আক্তার খুব সফলতার সাথে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার জন্য একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে তার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি যে বাংলাদেশে হুমকি অনুভব করেছেন সেটা অতীতে বাংলাদেশের কাউকেই জানাননি। এটার সত্যতা কতটুকু সেটা আমরা জানতে চাইব।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে একটি সম্মেলনে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তারের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছিলেন, কল্পনা আক্তারের মতো মানুষদের পাশে থাকতে চাই। যিনি বলেছেন, মার্কিন দূতাবাস তার পক্ষে কাজ করেছে বলে তিনি এখনও জীবিত আছেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্লিনকেন এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কনফারেন্সে এ কথা বলেছেন। যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যোগদান করেছিলেন। ব্লিনকেনের বক্তব্যটি শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে নয়। তিনি বাংলাদেশ উল্লেখ করে কোনো বক্তব্য দেননি। তিনি বাংলাদেশের একজন গার্মেন্টস কর্মীর নাম উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের কোনো ইস্যু সেখানে মেনশন করা হয়নি।
মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ইতোমধ্যে একজন লেবার এটাশে নিয়োগ দিয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রতিযোগী দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র এত সুবিধা বা এত জড়িত হওয়ার সুযোগ পায় না। যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পকে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ নেই।
বাংলাদেশ সফররত কমেনওয়েলথের প্রাক নির্বাচনি পর্যবেক্ষণ মিশনটির সম্পর্কে তিনি বলেন, অন্যান্য মিশনের মতোই এটি একটি অগ্রবর্তী মিশন। তারা ফিরে গিয়ে তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে রিপোর্ট দেবেন। তারা জানেন সময় খুবই সংক্ষিপ্ত। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কমনওয়েলথ আসবে কি আসবে না সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা রিপোর্ট খুব দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আমরা আশা করি তারা আসবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে তাদের যে কোনো কথা, আবেদন বা অনুনয়-বিনিয় একেবারে শুন্যের কোঠায় চলে গিয়েছিল। রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে। এটা চিরন্তন সত্য।
সারাবাংলা/আইই/এনইউ