Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাসে আগুন দিয়ে ভিডিও পাঠানো হয় শীর্ষ নেতাদের: র‍্যাব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৪৭ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৫২

ফাইল ছবি

ঢাকা: গত ১৮ নভেম্বর মিরপুরের কালশীতে বসুমতি পরিবহনের একটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বাস পোড়ানোর ভিডিও করে সেই ভিডিও হোয়াটসএপের মাধ্যমে পাঠানো হয় শীর্ষ নেতাদের কাছে। বিনিময়ে পাওয়া যায় টাকা। র‍্যাব জানিয়েছে, বাস পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত মূলহোতা এবং বাসে আগুন দেওয়া ব্যক্তিদের গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় গ্রেফতাররা হলেন- আল মোহাম্মদ চাঁন, মো. সাগর, মো. আল আমিন ওরফে রুবেল এবং মো. খোরশেদ আলম। তারা সবাই স্থানীয় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

খন্দকার আল মঈন জানান, সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গত ১৮ নভেম্বর বসুমতি পরিবহনের বাসে অগ্নিসংযোগকারী চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতাররা স্থানীয় যুবদলের কর্মী। তাদের দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নিদের্শনায় আল মোহাম্মদ চাঁন রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবীর আশপাশের এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগ করার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় চাঁন ও তার সহযোগী সাগর ও আলামিনসহ রাজধানীর মিরপুর-১১, তালতলা নাভানা, কালশী রোড, সিরামিক রোড এলাকায় সুবিধাজনক স্থানে সুবিধামতো সময়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রেকি করে। আল মোহাম্মদ চাঁন যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ এমএল পরিমাণ পেট্রোল বের করে টাইগার এনার্জি ড্রিংক এর বোতলে ভরে ঐদিন সন্ধ্যায় আল আমিনের কাছে দেয়। পরে তারা ওই দিনেই রাত ১১টার দিকে বাসে অগ্নিসংযোগ করার জন্য রাজধানীর কালশী সড়কে রেকি করে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় কালশী সড়কে মসজিদের পাশে পার্ক করা বসুমতি পরিবহনের একটি বাস সুবিধাজনক হওয়ায় চাঁনের নির্দেশে সাগর ও আল আমিন বাসের কাছে যায় এবং আল আমিন বাসের মাঝের জানালা খুলে পেট্রোল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে সাগরের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এ সময় চাঁন রাস্তার আইল্যান্ডের উপরে দাঁড়িয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের নির্দেশনা দেয় এবং ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে। অন্য কোনো বিরোধী দলের সদস্যরা যাতে এ ঘটনার ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের থেকে কৃতিত্ব নিতে না পারে সেজন্য সে বাসে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খোরশেদকে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ধারণ করে তাৎক্ষণিক পাঠাতে বলে। পরে চাঁন ধারণকৃত ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠায় বলে জানায়। তবে এ কাজের জন্য চাঁন প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পেলেও সে সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা দেয় বলেও জানা যায়।

কমান্ডার জানান, আল মোহাম্মদ চাঁন দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় যানবাহনে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা এবং নেতৃত্বে দেয়। এছাড়াও সে নাশকতা ঘটানোর জন্য সমর্থকদের কাজ ভাগ করে দিতো ও টাকা সংগ্রহ করে সকলের মাঝে বিতরণ করতো বলে জানা যায়।

মো. সাগর চাঁনের সহযোগী। সে চাঁনের নির্দেশে নাশকতার জন্য সুবিধাজনক টার্গেট ও স্থান রেকি করে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে। এ ছাড়া আল আমিন চাঁনের সহযোগী ও সাগরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে চাঁনের নির্দেশে কালশী সড়কে বসুমতি পরিবহনের বাসে অগ্নিসংযোগ করে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় মাদক সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে। খোরশেদ আলম চাঁনের সহযোগী। সে চাঁনের নির্দেশে বসুমতি পরিবহনের বাসে অগ্নিসংযোগের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে চাঁনকে পাঠায়।

এছাড়াও সে রাজধানীর মিরপুর এলাকার যেকোনো প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন নাশকতা এবং সহিংসতার ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে এবং এসকল ভিডিও চাঁনের মাধ্যমে দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের কাছে পাঠাতো।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান খন্দকার আল মঈন।

সারাবাংলা/জেআর/ইআ

টপ নিউজ বাসে আগুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর