২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার
১২ নভেম্বর ২০২৩ ১২:১৫ | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৫৬
ঢাকা: ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৯ সালে প্রথম জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলনে বলেছি, কুষ্ঠ সম্পর্কিত পুরাতন বিশ্বাস ও কুসংস্কার পরিহার করতে হবে। আমি এখন আবার সেই একই কথা বলে যাচ্ছি। ওই পুরনো ধ্যান-ধারণায় আমাদের থাকলে চলবে না। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি৷ এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবার পদক্ষেপ নিয়েছি। স্মার্ট বাংলাদেশের তো এই ধরনের কুসংস্কার মনের ভেতরে থাকলে আমরা স্মার্ট হবো কিভাবে? স্মার্ট হতে পারব না।
রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ন্যাশনাল লেপ্রোসি কনফারেন্স’ এ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশে বর্তমানে কিছু কিছু এলাকাভিত্তিক ৩ থেকে ৪ হাজার কুষ্ঠ আক্রান্ত রোগী রয়েছে বলে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। কুষ্ঠ রোগে বাংলাদেশ বিশ্বের ষষ্ঠতম দেশ বলেও অবহিত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের পদক্ষেপের ফলে কুষ্ঠ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘কুষ্ঠ রোগী শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য একটা ন্যাশনাল স্ট্যাটেজিক প্লান ফর ল্যাপ্রোসি ইন বাংলাদেশ ২০২২-২০৩০; এটা আমরা প্রণয়ন করেছি এবং যথাযথভাবে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিচ্ছি। এটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আরেকটা কাজ করেছি কুষ্ঠ রোগীদের অচ্ছুত হিসাবে গণ্য করা হতো। যে কারণে ব্রিটিশ সরকার এক সময় একটা আইন করেছিল সেটা হচ্ছে ল্যাপ্রোসি অ্যাক্ট ১৮৯৮। আমরা সেটা রহিত করেছি এবং সেই আইনটি বাতিল করেছি। ২৪ নভেম্বর ২০১১ সালে কুষ্ঠ আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিপরীতে ব্রিটিশ সরকারের করা এই আইন। কারণ এই আইনের জন্যই তাদেরকে সবসময় দূরে ঠেলে রাখা হতো। তাদেরকে বঞ্চিত করা হতো তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে। এখন আর কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না। পরিবার থেকে শুরু করে আশপাশে সকলেই তাদেরকে আর ঘৃণার চোখে দেখবে না। তারা ঘৃণার চোখে দেখার না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সহানুভূতি দরকার তাদের পাশে থাকা দরকার। তাদের সেবা দরকার। তাদের মনোবল সৃষ্টি করা দরকার। আমি আশা করি সকলেই সেটা করবেন। ওই পুরনো ভ্রান্ত ধারণা যেটা একসময় ছিল সেই ধারণা থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং আমি আনন্দিত এখন কিন্তু অনেকেই বেরিয়ে এসেছে এবং বেরিয়ে আসতে হবে।’
চিকিৎসক থেকে চিকিৎসা সেবা সংশ্লিষ্টসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে কুষ্ঠ আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবহেলা না করে তাদের প্রতি সকলকে সহানুভূতিশীল ও আরও যত্রমান হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই অবহেলা দিয়ে নয়, ঘৃণা দিয়ে নয়, ভালোবাসা দিয়ে আন্তরিকতা দেখিয়ে তাদের পাশে থেকে এই কুষ্ঠ রোগীদের সেবা করে তাদেরকে আমরা সুস্থ করে তুলি। তারা আমাদেরই আপনজন।’
সারাবাংলা/এনআর/ইআ