‘বাংলাদেশে উত্তর কোরিয়ার মতো শাসন চলছে’
১০ নভেম্বর ২০২৩ ২১:১৩ | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০০:৪৪
ঢাকা: বাংলাদেশে এখন উত্তর কোরিয়ার মতো একদলীয় শাসন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা একটি এক দলীয় দেশ শুধু নয়, নিষ্ঠুর এক দলীয় দেশ। এখানে সেই রকম একদলীয় শাসন চলছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের এখন আর কোনো প্রার্থক্য নেই, একাকার হয়ে গেছে। এখানে কথা বলা মানে হচ্ছে, সে অদৃশ্য হয়ে যাবে, লাশ হয়ে পড়বে। কয়েক দিন আগে যুব দলের এক ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দুই-তিন পর তার লাশ পাওয়া গেছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের চিত্র।’
তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টা সারাদেশে ২০৬ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে সারাদেশে ১৩ হাজারের অধিক নেতা-কর্মীকে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করেছে। এ সময় ১২জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, আহত হয়েছে ৫ হাজার ৯৮৭ জনের অধিক নেতা-কর্মী।’
রিজভী বলেন, ‘সরকার নানাভাবে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরি করবার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। অবৈধ সরকারের মন্ত্রীরা অনর্গল মিথ্যাচার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এক সন্ত্রাসী উপরিকাঠামো, সন্ত্রাসের শৃঙ্খলের মধ্যে সারা বাংলাদেশ নিশ্চুপ হয়ে গেছে। সারাদেশের মানুষ সমস্ত কিছু দেখছে। দেখতে দেখতে তাদের ভেতরে যে দ্রোহ, তাদের ভেতরে ভেতরে যে ক্রোধ, ভেতরে ভেতরে তাদের যে ক্ষোভ, তা পুঞ্জিভূত হচ্ছে। এটা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব টের পাচ্ছেন না।’
তিনি বলেন, ‘চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন ওরা বিভোর। ভেবেছে এভাবে নির্মমতা করে তারা চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকবে। তারা যেভাবে সাজিয়ে নিয়েছে, এই সাজানো বাগান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে অন্য সকলকে নিয়ে ভেবেছে— ক্ষমতা থেকে তাদের কেউ বিচ্যুত করতে পারবে না। ক্ষমতার মসনদ এতোই শক্ত ওরা মনে করছে। এই মসনদ শক্ত করার জন্য পৃথিবীর অনেক স্বৈরশাসক ভেবেছিল কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম হচ্ছে যে, অত্যাচারীরা যে অস্ত্র নিয়ে আঘাত করে স্বাধীনতাকামী মানুষ, গণতন্ত্রকামী মানুষ সেই অস্ত্র তাদের দিকেই তাক করে।’
রিজভী বলেন, ‘তারা ভাবছে, দুর্বিনীত অত্যাচারের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবার একটা একতরফা নির্বাচন করবেন। নির্বাচনের নামে একটা প্রহসন দেবেন। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন সেই প্রহসনের নির্বাচন ঘোষণা করবে— এটা ছাড়া অন্য কোনো পন্থা তাদের নেই। একটি রাজনৈতিক দল জনগণের ওপর নির্ভরশীল দল হলে তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে ভয় পাবে কেন?’
আগামী রোববার (১২ নভেম্বর) থেকে শুরু হতে যাওয়া অবরোধ কর্মসূচির প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আগামী পরশু থেকে শুরু হবে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি। এই কর্মসূচি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ যারা গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে, যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে, যারা প্রকৃত গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে, যারা অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিশ্বাস করে, যারা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন, প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে বিশ্বাস করে, তারা প্রত্যেকে এই অবরোধ কর্মসূচি সাফল্যমণ্ডিত করবে।’
সারাবাংলা/এজেড/এনএস