রিজার্ভ কমে ১৯.৪৫ বিলিয়ন ডলার
৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৫০ | আপডেট: ৮ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৫৪
ঢাকা: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের (বিপিএম-৬) হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ডলার। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের আমদানি বিল বাবদ ১২১ কোটি ডলার পরিশোধ করায় রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। প্রতি মাসে ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে ৩ মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
এর আগে গত ১০ সেপ্টম্বর আকু‘র জুলাই ও আগস্ট মাসের আমদানি বিল বাবদ ১৩১ কোটি ডলার পরিশোধ করায় রিজার্ভ কমে ২১.৪৮ বিলিয়ন ডলারের নেমেছিল। সর্বশেষ দুই মাসে রিজার্ভ কমেছে ২ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার। প্রতি মাসে ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে ৩ মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আকুর সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে এখনও ভাউচার পাইনি। আগামীকাল ভাউচার পাব। তারপর বিস্তারিত জানা যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে গ্রস রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর শর্ত অনুযায়ী বিপিএম-৬ ম্যাথোডের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের সঙ্গে ৫.৭৬ বিলিয়ন ডলারের পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ২০ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন। এখান থেকে আকুর ১.২১ বিলিয়ন ডলার বিল পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের নেমে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এখন যে পরিমাণ প্রকৃত রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে শুধু তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হল বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।
জানা গেছে, বাংলাদেশকে দেওয়া আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল বিপিএম-৬ ফর্মুলা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা। এটি চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই প্রকাশ করার কথা ছিল। সেই শর্তের আলোকে গত ১৩ জুলাই প্রথমবারের মতো আইএমএফের হিসাব মেনে রিজার্ভ প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওইদিন আইএমএফ‘র হিসাব মতো রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার আর তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব মতে রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।
জানা গেছে, আকু হলো এশিয়ার দেশগুলোর লেনদেন নিষ্পত্তির একটি মাধ্যম। এ সংস্থার সদস্য দেশ হলো- ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান। দেশের অবস্থা খারাপ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা বেরিয়ে গেছে। সদস্য দেশগুলো প্রতি ২ মাস অন্তর আমদানি বিল পরিশোধ করে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আকু বিল ছিল ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন, মার্চে ১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন, মে মাসে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন, জুলাই মাসে ১ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন এবং নভেম্বরে ১ দশমিক ২১ ডলার আকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/একে