পোশাক কারখানায় কারা উসকানি দিচ্ছে আমরা জানি: প্রধানমন্ত্রী
৪ নভেম্বর ২০২৩ ২১:৪৮ | আপডেট: ৫ নভেম্বর ২০২৩ ০০:১২
ঢাকা: গার্মেন্টস শ্রমিকদের অসন্তোষের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অন্যের কথায় নেচে, কারখানায় হামলা করে কারখানা ভেঙ্গে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশের ক্ষতি করলে নিজের ক্ষতি হবে। আর কারখানা বন্ধ হলে ওই গ্রামে ফিরে যেতে হবে। ইতোমধ্যে মজুরি কমিশন বসেছে। ধৈর্য ধরতে হবে। কারা উসকানি দিচ্ছে সেটি আমরা জানি।
শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে আরামবাগে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বহু প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল সার্ভিসের দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন ও পূর্ব-পশ্চিম এমআরটি লাইন-৫: নর্দার্ন রুটের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
জাতীয় নির্বাচনের আগে ঢাকাবাসীকে স্মার্ট স্বস্তির যাত্রা উপহার হিসেবে এমআরটি লাইন-৬ (মেট্রোরেল)-এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন। পরে বিকেলে আরামবাগে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন। শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষ্যে আরামবাগে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে দলীয় নেতাকর্মীদের জনস্রোতের ঢল নামে।
আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেলে চড়ে মতিঝিলে পৌঁছে ঢাকা মহানগরীর প্রথম পূর্ব-পশ্চিম এমআরটি করিডোর ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৫): নদার্ন রুটের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
চলমান গার্মেন্টস শ্রমিকদের অসন্তোষের পেছনে বিএনপি উসকানি দিচ্ছে অভিযোগ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকে গার্মেন্টেসে শ্রমিক অসন্তোষ হয়েছে। অথচ এই শ্রমিকরা দীর্ঘিদিন কাজ করেছিল। বিএনপির আমলে মাত্র ৫শ টাকা মজুরি ছিল। আমি ১৯৯৬ সালে যখন সরকারে আসি তখন দেখি মাত্র ৮শ টাকা মজুরি। আমি সরকারে এসে ১৬০০ টাকা করেছিলাম।’
‘এরপর বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। তারা তো এক পয়সাও বাড়ায়নি তাদের মজুরি। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে যখন সরকারে আসি আবার সেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি ৩২০০ টাকা বাড়াই। পাশাপাশি সকল শ্রমিকদের মজুরি আমরা বাড়িয়ে দেই। দ্বিতীয়বারে ৫৩০০ টাকা করি। তৃতীয়বারে ৮৩০০ টাকায় বৃদ্ধি করি। আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার ক্ষমতায়। এই তিনবার ১৬শ টাকা থেকে ৮ হাজার ৩শ টাকা পর্যন্ত উন্নীত করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তাদের বলব, যে কারখানা আপনাদের রুটিরুজি দেয়। যে কারখানায় শ্রম দিয়ে আপনারা পয়সা কামাই করেন। সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহও নারাজ হবে। আপনাদের যা প্রয়োজন হয়, অসুবিধা আমরা দেখি।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে শ্রমিকদের কল্যাণে ডে-কেয়ার সেন্টার, চিকিৎসা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, টিফিন ভাতা, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাপনা করাসহ নানামুখী উদোগের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘এই কাজগুলো তো বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় কোনোকিছুই করেনি। যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। আওয়ামী লীগ মানুষের কষ্ট দূর করতে জানে।’
পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যারা হুকুমদাতা; দেশেই থাকুক বিদেশেই থাকুক। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। বিদেশে বসে বসে সেই সুযোগ ব্যবহার করে হুকুমদারি করে। ওই বিদেশ থেকে ইনশাল্লাহ ধরে এনে এই বাংলাদেশে শাস্তি দেব ওই কুলাঙ্গারকে (তারেক রহমান)। কেউ ছাড়া পাবে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের এমপি রাশেদ খান মেনন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খোকন, আনোয়ার হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ অনেকে। যৌথভাবে সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।
সারাবাংলা/এনআর/একে