Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আলোচনা শেষ করতে পারেনি মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল, ফিরবে কাল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩১ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:২৩ | আপডেট: ১ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৭

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে টেকনাফ এসেছিল মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল। ছবি: সারাবাংলা

কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফে দিনভর ১৮০ রোহিঙ্গা পরিবার প্রধানের সঙ্গে আলোচনা শেষ করতে পারেনি মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল। ৩২ সদস্যের এই দলটি দিন শেষে মিয়ানমারের ফিরে গেছে। তবে আলোচনা শেষ করতে তারা আবার ফিরে আসবেন কক্সবাজারের টেকনাফে।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার নাফ নদীর জালিয়াপাড়ার জেটিঘাটে অবতরণ করেন মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতিনিধি দলটি। বিকেল ৪টায় একই জেটিঘাট দিয়ে তারা মিয়ানমারে ফিরে যায়। আগামীকাল বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে তারা ফের টেকনাফে আসবেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে নেবেন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার বিকেলে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারবিষয়ক সেলের মহাপরিচালক মাইনুল কবির সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে সরকার কাজ করছে। রোহিঙ্গারা যেন নিজ দেশে ফিরে নিজেদের জায়গায় স্থায়ীভাবে থাকতে পারে, সে বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হয়েছে। চুক্তির আওতায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যেন রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় মিয়ানমার ফিরে যায়।

মাইনুল কবির আরও বলেন, এর আগে চলতি বছর মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল দুই বার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ করতে এসেছিল। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন তারা। আজও তারা সুনির্দিষ্ট করে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের কে কোন গ্রামে যাবে, কীভাবে যাবে। এই আলোচনা অব্যাহত আছে, অব্যাহত থাকবে।

তবে রোহিঙ্গারা কখন নিজ দেশে ফিরে যাবেন সেটি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বলে জানান মাইনুল কবির। বলেন, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শুধু নয়, যাওয়ার পর যেন তারা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারেন এবং প্রত্যাবাসন টেকসই ও স্থায়ী হয়, সে বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চলছে।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গাদের সংশয় ও অবিশ্বাস দূর করতে মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের আলোচনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মহাপরিচালক।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে জালিয়াপাড়ায় জেটি ঘাটে আসে প্রতিনিধি দলটি। এরপর বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিয়ে মতবিনিময় করেন। দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে নদী নিবাস রেস্ট হাউজ ও গণপূর্ত বিভাগের রেস্ট হাউজে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে।

বুধবারও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটি টেকনাফ আসবেন বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, প্রতিনিধি দলটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে ১৮০টি রোহিঙ্গা পরিবারের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে পরিবার প্রধানদের সম্মতি আদায়ের চেষ্টা করছে।

শরণার্থী কমিশনার বলেন, জল ও স্থলপথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে, যা ২০১৮ সালে দুই দেশের চুক্তিতে উল্লেখ আছে। আমরা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আমরা আশা করি, দুপক্ষের কথাবার্তার মাধ্যমে তাদের মধ্যে যে আস্থার সংকট রয়েছে, সেটি দূর হবে এবং অচিরেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে। তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অবশ্যই মর্যাদাপূর্ণ টেকসই ও স্বেচ্ছায় হতে হবে, যার জন্য বাংলাদেশ সরকার সবসময় কাজ করে যাচ্ছে।

এর আগে এ বছরেই দুবার মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল আসে টেকনাফে। গত ১৫ মার্চ প্রথম দফায় ও ২৫ মে দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দলের সদস্যরা। এর মধ্যে গত ৫ মে বাংলাদেশের সাত সদস্য ও রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল মিয়ানমারের মংডুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন।

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন ২০১৭ সালে। উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে এখন ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। এই ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।

সারাবাংলা/টিআর

টপ নিউজ মিয়ানমার প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর