‘বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহার বা চুরি অনেক কমেছে’
২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:২৮ | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৪৯
ঢাকা: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ (বিদ্যুৎ বিভাগ) মন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বর্তমান সরকারের নিবিড় তদারকি কার্যক্রমের ফলে বিদ্যুতের অবৈধ ব্যবহার বা চুরি বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। অবৈধ উপায়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার, মিটার টেম্পারিং, মিটার বাইপাস, হুকিং ইত্যাদির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহারের চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং নিজস্ব জনবল দ্বারা ঝটিকা অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ অবৈধ ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।২০৪১ সালের মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিচ্ছন্ন নবায়নযোগ্য জ্বালানী হতে উৎপাদন হবে।
নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদে এ তথ্য জনান। নসরুল হামিদ বলেন, বিগত ১৫ বছরে নানা কার্যক্রম গ্রহন করার ফলে সামগ্রিক সিস্টেম লস। ১৬.৮৬% হতে হ্রাস করে ১০.৩৩% এ নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। বিদ্যুৎ চুরি, গ্রাহকদের ভৌতিক বিল প্রদান এবং অন্যান্য হয়রানি বন্ধের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পদক্ষেপগুলো হচ্ছে-নিজস্ব জনবল দ্বারা বিশেষ টিম গঠন করে নিয়মত ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নিয়মিতভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, জরিমানা আদায় ও বিদ্যুৎ আইন-২০১৮ মোতাবেক শাস্তিআরোপ;অবৈধ সংযোগ নিরূপণের লক্ষ্যে মিটার চেকিং কার্যক্রম; ফিডার ভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবহার মনিটরিংয়ের জন্য মিটার স্থাপন; বিদ্যুৎ বিল বিগত মাসের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে কম হলে সংযোগের সার্বিক বিষয়সমূহ সূক্ষ্মভাবে নিরীক্ষণ ,পোস্ট-পেইড মিটার পরিবর্তন করে ডিজিটাল ও প্রি-পেইড/স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপন; গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত গণশুনানি/গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনা এবং লিফলেট বিতরণ করা।
এছাড়া মাইকিং করে এবং প্রিন্ট, ইলেকট্রিক ও সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট ও মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গ্রাহকগণকে অবৈধ সংযোগ গ্রহণের ঝুঁকি এবং শাস্তি ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধের বিষয়ে সচেতন করা; এসএমএস, ওয়েবসাইট, সোশাল মিডিয়া এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে মেইনটেনেন্স বা অন্য কোনো কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে পূর্বেই এলাকাভিত্তিক গ্রাহকদের অবহিত করা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের কেন্দ্রীয় হটলাইন নম্বর ১৬৯৯৯ এবং সংশ্লিষ্ট বিতরণ সংস্থার কল সেন্টার, এ্যাপস, ও ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ২৪/৭ অভিযোগ গ্রহণ, ট্রাকিং এবং দ্রুততম সময়ে গ্রাহকদের অভিযোগ নিষ্পত্তি করা; জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিপরীতে গৃহীত কার্যক্রম নিয়মিতভাবে অবহিত করা এবং এ বিষয়ে প্রশাসনিক সহায়তা অব্যাহত রাখা।
ভোলা তিন আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুত ও জ্বালানি মন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সারাদেশে সাশ্রীয় মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যকে বিবেচনায় নিয়ে সরকার বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার প্রদান করে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ খাতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে জ্বালানি বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, এলএনজি, তরল জ্বালানি, ডুয়েল-ফুয়েল, পরমাণু বিদ্যুৎ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র নির্মাণসহ বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ফলশ্রুতিতে মুজিববর্ষে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। সাশ্রীয় বিদ্যুৎ ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিচ্ছন্ন নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন হবে।
সারাবাংলা/এ এইচ এইচ/এনইউ