দশমী বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু দুর্গোৎসবের শেষ দিন
২৪ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৪৭ | আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৩ ১২:১৬
ঢাকা: শারদীয় দুর্গাপূজার আজ শেষ দিনে মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে দুর্গাদেবীর দশমী বিহিত পূজা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে চলছে দুর্গাদেবীর দশমী বিহিত পূজা।
এরপর দুর্গাদেবীর দশমী বিহিত পূজা সমাপন শেষে অঞ্জলি প্রদান এবং সিঁদুর খেলা অনুষ্ঠিত হবে। শেষে হবে বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন।
এদিন রাজধানীর মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরে সকাল থেকে ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল ৯টার দিকে শুরু হয় দশমী বিহিত পূজা। ঢাকের বাদ্য আর ভক্তদের উলুধনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। একইসঙ্গে দেবী দুর্গার উদ্দেশে ফুল নিবেদন ও আশীর্বাদ প্রার্থনাও সমান তালে চলতে থাকে।
এদিন দশমী পূজা উদ্যাপনের প্রধান আচারের অংশ হিসেবে নারী ভক্তরা বিভিন্ন মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গার পায়ে সিঁদুর নিবেদন করেন। যা ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলার অংশ। এই আচারে দেবী দুর্গার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে হিন্দু নারীরা একে অন্যের গায়ে সিঁদুর মাখিয়ে জীবনে সমৃদ্ধি কামনা করেন। এদিন সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।
দশমীতে বিসর্জনের মাধ্যমে পাঁচ দিন বাপের বাড়ি অর্থাৎ মর্ত্যলোকে কাটিয়ে দেবী ফিরবেন দেবালয়ের (স্বর্গ) কৈলাসে স্বামীর বাড়িতে। সঙ্গে থাকবে চার সন্তান লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শঙ্খ, খোল ও ঢাকের মতো বাদ্যযন্ত্রের সুরে দুর্গার স্তূতি গাইতে গাইতে প্রতিমাকে নিয়ে যাবে নদী, সেখানেই হবে বিসর্জন।
শাস্ত্রমতে, বিজয়া দশমীর দুটি তাৎপর্য। একটি দেবী দুর্গার বিজয়। অন্যটি রামচন্দ্রের বিজয়। বিজয়া দশমীর আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে— হিমালয় রাজকন্যা দেবী দুর্গা বা পার্বতী কিংবা উমা নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছিলেন দেবতা শিবকে। শিবের আবাসস্থল কৈলাস পর্বত। সেখান থেকে দেবী দুর্গা বা পার্বতী পিতৃগৃহে আসেন আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী— এই তিন দিন পিত্রালয়ে থাকার পর দশমী তিথিতে পতিগৃহ কৈলাসে প্রত্যাবর্তন করেন। কন্যাকে বিদায় জানানোর বেদনায় বিধুর-বিষাদাচ্ছন্ন হয় দশমী তিথি। তাই দশমী তিথি বিষাদের-বেদনার।
এভাবে দেবী দুর্গা হয়ে ওঠেন ঘরের মেয়ে, যে কি না নাইওরে এসে, তিনদিন থেকে চার দিনের দিন স্বামীগৃহে ফিরে যান। এভাবে দুর্গাপূজার মধ্যে বাঙালির সমাজ ও যাপিত জীবনের প্রতিফলন ঘটে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ