Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাজার হাসপাতালে হামলা, নিহত ৫০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৮ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৫১ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ০২:১৯

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। নিহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা তাৎক্ষণিক জানা না গেলেও এ সংখ্যা পাঁচ শতাধিক বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আব্বাস তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। বুধবার (১৮ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নির্ধারিত একটি বৈঠকও বাতিল করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

হামাস নেতৃত্বাধীন গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে ইসরাইলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫০০-এর বেশি নিহত হয়েছেন। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে। নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গাজার প্রতিরক্ষা প্রধান আল-জাজিরা টেলিভিশনে বলেছেন, আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে ৩০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। গাজার দুটি বিভাগই হামাস পরিচালিত সরকারের অধীনে।

ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, গাজা শহরের আল-আহলি হাসপাতালে হামলা ২০০৮ সালের পর সংঘটিত পাঁচটি যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ইসরাইলি বিমান হামলা।

তিনি বলেন, আল-আহলি আরব হাসপাতালে গণহত্যা আমাদের ইতিহাসে নজিরবিহীন। যদিও আমরা অতীতে অনেক ট্র্যাজেডি দেখেছি। আজ রাতে যা ঘটেছে তা একটি গণহত্যার সমান।

চলমান হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে গাজা শহরের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল হাজার হাজার মানুষের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। গাজা সিটির বহু মানুষ ইসরাইলি নির্দেশ মেনে শহর ত্যাগ করতে পারেননি। তাদের বেশিরভাগই ইসরাইলি বোমাবর্ষণ থেকে রেহাই পাওয়ার আশায় হাসপাতাল ও বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

গাজা শহরের চিকিৎসক জিয়াদ শেহাদাহ আল জাজিরাকে বলেন, যা হয়েছে তা ভয়ানক, কারণ এখানে সবাই বেসামরিক। তারা তাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে এমন একটি জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিলে যা তারা নিরাপদ বলে বিশ্বাস করেছিল। এটি একটি হাসপাতাল, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে একটি নিরাপদ জায়গা।

তিনি বলেন, মানুষ তাদের বাড়িকে বিপজ্জনক মনে করে নিরাপদ থাকার জন্য আমাদের স্কুল এবং হাসপাতালে চলে এসেছে। আর এক মিনিটেই হাসপাতালে তারা সবাই মারা গেছে । এই মুহূর্তে মৃতের সংখ্যা ৫০০-এর বেশি, তবে আমরা আশঙ্কা করি সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এটি একটি গণহত্যা।

বিজ্ঞাপন

ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন প্রতিনিধি নেবাল ফারসাখ পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে আল জাজিরাকে বলেন, যারা গাজা শহরের আল-আহলি আরব হাসপাতালে জড়ো হয়েছিল তাদের অনেকেই সরে যাওয়ার জন্য ইসরাইলি নির্দেশ পালন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে দক্ষিণে যেতে পারছিল না তারা। অনেকে প্রশ্ন করছে, নিহতের সংখ্যা এত বেশি কেন? কারণ এই ফিলিস্তিনি যারা হাসপাতালের সামনে আশ্রয় চেয়েছিল, তারা ভেবেছিল এখানে নিরাপদ। কিন্তু গাজার ক্ষেত্রে এটি সত্য নয়। ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে এটি সত্য নয়।

এদিকে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গাজার হাসপাতালে তারা কোনো হামলা চালায়নি। হাসপাতাল থেকে হামাসের রকেট ছোঁড়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা থেকে বিস্ফোরণে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিন্দার ঝড়

অধিকৃত গাজা উপত্যকার হাসপাতালে বোমা হামলার কঠোর নিন্দা করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক এই হামলার নিন্দা করে এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে, বেসামরিক নাগরিকদের অবিলম্বে সুরক্ষা এবং গাজা সিটি খালি করার ইসরাইলি আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মেডগ্লোবাল মানবিক সংস্থার সভাপতি জাহের সাহলউল আল-আহলি আরব হাসপাতালে ইসরাইলি হামলাকে একবিংশ শতাব্দীতে একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে সবচেয়ে জঘন্য হামলা বলে অভিহিত করেছেন।

মিশর, কাতার, জর্ডান, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ হাসপাতালে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা ভয়াবহ এবং একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

এদিকে, আশ্রয়কেন্দ্র হিসেব ব্যবহৃত একটি বিদ্যালয়েও ইসরাইলি বোমা আঘাত হেনেছে। এতে ১২ জন নিহত হয়েছেন। বিদ্যালয়ে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

সারাবাংলা/আইই

ইসরাইল ফিলিস্তিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর