অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
১২ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৪৭ | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০০:৫০
ঢাকা: অপ্রয়োজনীয় সিজার প্রতিরোধে তৈরি করা নীতিমালার অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে এ বিষয়ে প্রচারণা চালাতে বলেছেন হাইকোর্ট। রায়ে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন প্রতিরোধের লক্ষ্যে তৈরি করা নীতিমালা বাস্তবায়নে ছয় মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে বলেছেন আদালত।
অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান বন্ধে হাইকোর্টে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাখিল করা এ সংক্রান্ত বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি বুধবার (১১ অক্টোবর) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন প্রতিরোধে কার্যকর তদারকি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে আদালত এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন রাশনা ইমাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
রায়ে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন কমানোর বিষয়ে স্বল্প মেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছেন আদালত।
রায়ের পর আইনজীবী রাশনা ইমাম বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন এর মতে সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে শতকরা ১০ থেকে ১৫ শতাংশের বেশি সিজার পদ্ধতি কোনো দেশেরই প্রয়োজনীয় হতে পারে না। বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে, এটি প্রায় ৩১ শতাংশ। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৮৩ শতাংশ এবং সরকারি হাসপাতালে এটার হার ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া এনজিও হাসপাতালগুলোতে ৩৯ শতাংশ। এটি আসলে অ্যালার্মিং রাইজ, এ রেটটার বৃদ্ধি থামানোর জন্যই জনস্বার্থে এ রিট মামলাটি করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুন রুল জারি করেছিলেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন।’
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন।
২০১৯ সালের ২১ জুন বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছিল, এতে বাবা-মায়েদের সন্তান জন্মদানে ব্যাপক পরিমাণে খরচের ভার বহন করতে হচ্ছে। এরপর এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি করেছিলেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে তাদের আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম।
আদালত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুন রুল জারি করেছিলেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর সেই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। আজ সেই রুল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে