মা-মেয়েকে জবাই করে খুন, যুবকের মৃত্যুদণ্ড
১২ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৩৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মা-মেয়েকে জবাই করে হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ড দেন।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রামের ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম সিরাজাম মুনিরা এ রায় দেন।
ট্রাইবুন্যালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দীর্ঘতম বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, একই রায়ে আদালত আরও এক ব্যক্তিকে তিন বছরের কারাদন্ডসহ দশ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে, আরও তিন মাস কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বেলাল হোসেন (২৬) ও টিটু সাহা (৪৫)।
মামলার নথি পর্যালোচনা করে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন খাসির মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলম। ২০১৫ সালের ৭ মে সকালে শাহ আলম দোকানে চলে যান। দুই ছেলেও স্কুলে চলে যায়। তখন ঘরে ছিল তার স্ত্রী নাছিমা বেগম ও মেয়ে রিয়া আক্তার ফাল্গুনী। সকাল পৌনে ১০টার দিকে শাহ আলমকে তার শ্যালক আলাল ফোন করে জানায় নাছিমা ও রিয়া খুন হয়েছেন।
পরে তিনি ঘরে গিয়ে স্ত্রী-কন্যাকে মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ঘরে থাকা এক লাখ ১১ হাজার টাকা, চার ভরি স্বর্ণালংকার ও দুটি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায় খুনি। ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহ আলম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে সদরঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৫ সালের ২৭ মে হত্যাকাণ্ডের দিন খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে খুন হওয়া শাহ আলমের খালাতো ভাই বেলাল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খুন হওয়া নাছিমা বেগমের স্বর্ণালংকার নগরীর বাকলিয়া ইসাহকের পুল এলাকায় একটি জুয়েলার্সের কর্মচারী টিটু সাহার কাছে বিক্রি করেছিল বলে জানায় বেলাল হোসেন।
পরে টিটু সাহাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু সারাবাংলাকে জানান, বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। বেলাল যে স্বর্ণ লুট করেছিল তা কিনে নিজের হেফাজতে রাখায় আসামি টিটু সাহাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামি দুইজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।পরে সাজা পরোয়ানা মূলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সারাবাংলা/আইসি/এনইউ