খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিদেশি সাক্ষী আনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ
১১ অক্টোবর ২০২৩ ১২:২৭
ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে তিন বিদেশি সাক্ষীকে দেশে আসার অনুমতি দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল এ আবেদন করেন।
আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘নাইকো মামলায় এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে বিদেশি সাক্ষীকে দেশে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমরা এই অনুমতির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছি। ১৭ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’
এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে তিন বিদেশি সাক্ষীকে দেশে আসার অনুমতি দেন আদালত। তিন সাক্ষীর মধ্যে কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একজন রয়েছেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত এ অনুমতি দেন।
তার আগে তাদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা আদালতে জমা দেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তবে বিদেশি সাক্ষী আনার বিষয়ে আপত্তি দেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
এর গত ১২ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বিদেশি সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
ওইদিন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান দুদকের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তারও আগে গত ২৩ মে তার বক্তব্যের একটি অংশ রেকর্ড করেন আদালত।
এ ছাড়াও মামলার দুই আসামি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ও ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়ার পক্ষে কয়েক দফায় সাক্ষীদের জেরা করা হয়।
কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে করা চুক্তির মাধ্যমে দেশ ও রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
এরপর ২০০৮ সালের ৫ মে এই মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
এরপর গত ১৯ মার্চ নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
এই মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
অপরদিকে আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ