Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পি কে হালদারের ২২ বছরের কারাদণ্ড প্রত্যাশা করছে দুদক

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৬ | আপডেট: ৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৩

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগের মামলায় গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আজ রোববার (৮ অক্টোবর) তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।

এদিন দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতের এই রায় ঘোষণা করার কথা। রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা ২২ বছরের কারাদণ্ড প্রত্যাশা করছে দুদক। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতের দিকে তাকিয়ে আছেন। তারা ন্যায়বিচার প্রার্থনা করছেন।

বিজ্ঞাপন

মামলার অপর আসামিরা হলেন- পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি, শংখ বেপারী, অবন্তিকা বড়াল, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধা।

এদের মধ্যে, চার আসামি অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধা কারাগারে আটক রয়েছেন। মামলার অপর ১০ আসামি পলাতক রয়েছেন।

রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আপনারা জানেন, এটি বহুল আলোচিত একটি মামলা। পি কে হালদারসহ মোট আসামি ১৪ জন। পি কে হালদার এ মামলায় পলাতক রয়েছেন। তিনি ভারতের কারাগারে আটক। এ ছাড়া তার মাসহ নয় আসামি পলাতক। বর্তমানে চার জন কারাগারে আছেন। দুদকের পক্ষ থেকে এ মামলায় শতাধিক সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। দুর্নীতির অভিযোগে সর্বোচ্চ ১০ বছর এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ১২ বছরের সাজা হতে পারে। আমরা তাদের ২২ বছরের সাজাই প্রত্যাশা করছি।’

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘পি কে হালদার পলাতক রয়েছেন। তিনি দেশে নেই। মামলায় ১৪ জন আসামি হলেও চার জন আইনি লড়াই করেছেন। আমরা যাদের জন্য লড়েছি- তাদের মধ্যে কাউকে বলা হচ্ছে পি কে হালদারের আত্মীয়, আবার কাউকে বলা হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানের কর্মী। তাদের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করা হয়েছে বলে মামলায় দাবি করা হয়েছে। আমরা বলেছি, পি কে হালদার প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে কাজগুলো তাদের না জানিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে তাদের নলেজ থাকার কথা নয়। পি কে হালদার কখনো কখনো তার আত্মীয় স্বজনকে অ্যাবইউজ করেছেন বিভিন্নভাবে। যেগুলো তারা জানতেও পারেনি। এগুলো লার্নেড কোর্টকে বলেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই ভালো কিছুই আশা করছি। তবে ভালো হতো যদি পি কে হালদার সাহেব আটক হতেন এবং মামলা কনটেস্ট করতেন। তাহলে হয়তো প্রকৃত সত্যটা সবার সামনে চলে আসতো। পি কে হালদারের অনুপস্থিতিতে মামলার ট্রায়াল হয়ে গেছে। এখন কিছু করারও নেই। আশা করছি, পি কে হালদারের যারা কর্মী, আত্মীয় ছিলেন তাদের বিষয়টি আদালত বিবেচনা করবেন। আদালত কোন আইনের মাধ্যমে কোন পর্যন্ত নিয়ে যাবেন সেই বিষয়ে তো মন্তব্য করা সম্ভব নয়।’

আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘ভালো হতো পি কে হালদারসহ মামলার ট্রায়াল হলে। আসল তথ্য বেরিয়ে আসতো। উনি কোথায় কী করেছেন, কাকে টাকা দিয়েছেন- এসব তথ্য বেরিয় আসতো। টাকা পাচারের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই মামলায় এমন কোনো তথ্য আসেনি যে পি কে হালদার দেশের বাইরে টাকা নিয়ে গেছেন। এমন কোনো এভিডেন্স আসেনি। তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা নিয়েছেন। সেই টাকাগুলো আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে পার্চেস করা হয়েছে, সে তথ্যগুলো মামলাতে এসেছে। তাহলে মানিলন্ডারিং কীভাবে হয়েছে, আদৌ তিনি দেশের বাইরে টাকা নিয়েছেন কিনা, অ্যাবইউজ করেছেন কিনা?- জিনিসগুলো তো আড়ালেই রয়ে গেল। সামনে এলো না। আমরা আমাদের বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবেলা করেছি। এখন দেখি কী হয়।’

জানা গেছে, আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার টাকা পাচারের পাশাপাশি নিজেও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। গত বছর ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাকে গ্রেফতার হয়। বর্তমানে ভারতের কারাগারে রয়েছেন তিনি।

গত ২০ জুলাই মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ১০৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এরপর গত ৪ অক্টোবর দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালতে রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।

জানা যায়, পিকে হালদার বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া ওই অর্থ আড়াল করতে বিদেশে পাচার করে মানি লন্ডারিং আইনেও অপরাধ করেন।

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

২২ বছর কারাদণ্ড পি কে হালদার প্রত্যাশা মামলার রায়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর