Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্রমেই বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি, আতঙ্কে ৫ জেলার মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৩৮

রংপুর: অবিরাম বৃষ্টি আর ভারতের উত্তর সিকিমে ভয়াবহ বন্যা ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার নদী তীরবর্তী এলাকায় এলাকায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।

এদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়া তিস্তা পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। তাই রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চলে বসবাসকারী ৫০টি গ্রামের ৭০ হাজার পরিবারকে বাড়িঘর ছেড়ে মালামাল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে মাইকিং শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্যার আশঙ্কায় এই ৫ জেলার কর্মরত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে তিস্তা নদীর পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক বলেন, কাউনিয়া পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। ঢুস মাড়ার চড় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষি জমিতে পানি উঠেছে। তবে এখনো বাড়ি ঘরে কোথাও পানি উঠেনি। কাউনিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আর গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না জানান, তিস্তার গংগাচড়া পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে লক্ষিটারী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ায় লক্ষিটারীর পূর্ব অংশ প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় যেন মানুষের জানমালের ক্ষতি না হয়, সে লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করছে।

এদিকে গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর, নোহালী ও লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামসহ কাউনিয়া উপজেলার ধুসমারার চর, আজম খাঁ চর, হাইবত খাঁ গোনাই, পল্লীমারী চর, একতা চর মিলনবাজার, গোপীকাল্লা, ডালার চর ও গোদাই চরের ৭০ হাজার পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে এদিকে গাইবান্ধায় তিস্তা নদী এলাকায় আকস্মিক বন্যা হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হতে পারে। একইসঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি আরও বেড়েছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কার স্থানীয়দের।

সারাবাংলা/আরএইচএস/এনএস

টপ নিউজ তিস্তা নদী তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর