প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে কমিটি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৩০ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:০৮
ঝালকাঠি: নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল নিকারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে বেত এবং ঝাড়ু দিয়ে শিক্ষকরা পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিন শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ২ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আকতার হোসেন।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) সাইদুর রহমান স্বপন ও মো. কামরুজ্জামান রেজা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, গত রোববার বিদ্যালয়ে এসে বাংলা বই হারিয়ে ফেলে ৩য় শ্রেণির ছাত্র রেজোয়ান ইসলাম লিমন। পরে সে প্রধান শিক্ষক সেলিম হোসাইনের কাছে একটি বাংলা বই চাইলে তিনি লিমনকে হাতপাখা দিয়ে পেটানো শুরু করেন। একপর্যায়ে পাখাটি ভেঙে যায়। খবর পেয়ে লিমনের মা লিজা বেগম বিদ্যালয়ে ছুটে গেলে প্রধান শিক্ষক মারধর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
এছাড়া ঝাড়ু বানানোর জন্য লোটাস নামে ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রকে নারকেলের শলা আনতে বলা হয়েছিল স্কুল থেকে। ওই ছাত্র শলা না দিতে পারায় সহকারী শিক্ষক মো. ফেরদৌস ও সাবিহা সুলতানা নামে আরেক সহকারী শিক্ষিকা তাকে ঝাড়ুপেটা করেন।
পাশাপাশি দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (দ্বিতীয় সাময়িক) পরীক্ষার পরদিন বিদ্যালয় না যাওয়ায় ৫ম শ্রেণির ছাত্র সাজিন গাজিকে বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়মনীতি না মেনে প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছেমতো স্কুল চালাচ্ছেন। নিজের মতো করে আসেন বিদ্যালয়ে, ছুটিও দেন ইচ্ছেমতো। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর নিয়ম থাকলেও কয়েকজন শিক্ষক আসেন ১০-১১টার দিকে। বিদ্যালয়ে এসে কোনোরকমে দু’একটি ক্লাস নেন। এরপর বাড়ি যান তারা।
তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক মো. ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘লোটাস নামে ওই ছাত্রকে রাস্তা থেকে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ডেকে নিয়েছিলাম। তখন সাবিহা ম্যাডাম তাকে ধমক দেয়। তবে মারধর করেননি।’ ঝাড়ু দিয়ে মারধরের অভিযোগ সহকারী শিক্ষিকা সাবিহা সুলতানাও অস্বীকার করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম সেলিম হোসাইন বলেন, ‘শিক্ষকদের মারধরের অভিযোগ সত্য নয়। এটিও স্যারেরা তদন্ত এসেছিলেন, আমি আমার বক্তব্য লিখিত আকারে তাদের কাছে জমা দিয়েছি।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মো. আকতার হোসেন বলেন, ‘ঘটনা তদন্তের জন্য ২ জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওই বিদ্যালয়ের পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা এবং বিদ্যালয় মেরামতের জন্য বরাদ্দের টাকা নয়-ছয় করার অভিযোগে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম সেলিম হোসাইনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা অনিতা রানী দত্ত। এরপর গত ৩০ আগস্ট একই দিনে সেলিম হোসাইনসহ ৩ শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় তাদের শোকজ করেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুর রহমান স্বপন।
সারাবাংলা/এমও
ছাত্রকে নির্যাতন টপ নিউজ টপ সি তদন্ত কমিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়