Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিক্ষার্থী বেশি দেখিয়ে বরাদ্দ নয়ছয়— তদন্তে সমাজসেবা অধিদফতর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:১৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিবন্ধীদের বিশেষায়িত স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা নথিপত্রে বেশি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের একটি অভিযোগের তদন্তে নেমেছে সমাজসেবা অধিদফতর। গত ১৪ আগস্ট সারাবাংলা ডটনেটে ‘শিক্ষার্থী বেশি দেখিয়ে বরাদ্দ নয় ছয়— সমাজসেবার কাণ্ড!’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছে সমাজসেবা অধিদফতর।

জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট সারাবাংলার প্রতিবেদন এবং এ সংক্রান্ত নথিপত্র সংযুক্ত করে লক্ষ্মীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম পাটোয়ারীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন সমাজসেবা অধিদফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কামরুল আসলাম চৌধুরী এ সংক্রান্ত চিঠিতে সই করেন।

বিজ্ঞাপন

চিঠিতে বলা হয়েছে— গত ১৪ আগস্ট অনলাইনভিত্তিক ‘সারাবাংলা’ পত্রিকায় পিএইচটি সেন্টার, চট্টগ্রামের বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর অভিযোগ এনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক পত্রজারির সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন নিম্নস্বাক্ষরকারী বরাবর প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন ও মতামত প্রদানের জন্যও অনুরোধ করা হলো।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী বেশি দেখিয়ে বরাদ্দ নয় ছয়— সমাজসেবার কাণ্ড!

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের সমাজসেবা কার্যালয়ের বিরুদ্ধে আনা একটি অভিযোগ আমাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (বুধবার) সকালে তদন্ত শুরু করব। সবাইকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেব।’

বিজ্ঞাপন

নগরীর মুরাদপুরে জেলা সমাজসেব কমপ্লেক্স ভবনে প্রতিবন্ধীদের দুইটি বিশেষায়িত স্কুলে আদতে শিক্ষার্থী ৪০ জন। এর মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে সবমিলিয়ে ২৩ জন। কিন্তু আবাসিকে কখনও দেখানো হয় ৪৭ জন, আবার কখনও ৫৭ জন।

আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীর তালিকা চাইলে সমাজসেবা অধিদফতরের চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক ও স্কুলটির তত্ত্বাবধায়ক কামরুল পাশা ভূঁইয়া সারাবাংলাকে জানিয়েছিলেন, স্কুলে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী আছে ১০২ জন। এর মধ্যে আবাসিক ৪৭ জন ও অনাবাসিক ৫৫ জন।

প্রতিজন আবাসিক শিক্ষার্থীর জন্য মাসে ভাতা পাওয়া যায় ৩ হাজার ৬০০ টাকা। সে হিসাবে মাসে এক লাখ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা সরকার থেকে বরাদ্দ পাওয়ার কথা। অর্থাৎ মাসে কমপক্ষে ৮৬ হাজার ২০০ টাকা ‘হাওয়া’ হয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে অনাবাসিক দৃষ্টি-প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসামগ্রীও দেওয়া হয় না। শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার ভবনের নাম দিয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তারা নিজেদের অফিস বানিয়েছেন। বিদ্যালয় দুটিতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি আছে। তবে অন্যান্য বিদ্যালয়ে পড়ুয়া দশম শ্রেণি পর্যন্ত আবাসিক সুবিধা পেয়ে আসছিল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেটি এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

একই ভবনে সমাজসেবা অধিদফতরের অধীন পরিচালিত বাক্‌ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেও রয়েছে একই ধরনের অভিযোগ। এ ছাড়া লেখাপড়ার সুবিধার্থে বিভিন্ন এনজিও থেকে দেওয়া স্মার্টফোনও নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে স্কুল কর্তৃপক্ষের ওপর।

গত ১৩ আগস্ট সরেজমিনে দেখা যায়, ১৫ জন বাক্–শ্রবণ ও পাঁচজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ক্লাস করছে। এর মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থী ১৮ জন। আবাসিক শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাসে ঢুকতে চাইলে ভবনের দায়িত্বে থাকা দারোয়ান সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে ঢুকতে দেননি।

সারাবাংলা/আইসি/একে

অসঙ্গতি টপ নিউজ শিক্ষার্থী সমাজসেবা অধিদফতর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর