রিজার্ভ কমে ২১.৪৮ বিলিয়ন ডলার
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৩২ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৪৭
ঢাকা: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের (বিপিএম-৬) হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১৪৮ কোটি ডলার। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই ও আগস্ট মাসের আমদানি বিল বাবদ ১৩১ কোটি ডলার পরিশোধ করায় এবার রিজার্ভ কমে ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। প্রতি মাসে ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে ৩ মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ। যদিও আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী সেপ্টেম্বরে প্রকৃত রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার রাখার কথা।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আকুর বিল ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন (১৩১ কোটি) ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। তবে প্রকৃত রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসবে।
জানা গেছে, এর আগে গত ১৩ জুলাই প্রথমবারের মতো আইএমএফের হিসাব মেনে রিজার্ভ প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওইদিন আইএমএফ‘র হিসাব মতো রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবমতে রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আকু বিল ছিল ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন, মার্চে ১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন, মে মাসে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন, জুলাই মাসে ১ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার আকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, আকু হলো এশিয়ার দেশগুলোর লেনদেন নিষ্পত্তির একটি মাধ্যম। এ সংস্থার সদস্য দেশ হলো- ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান। দেশের অবস্থা খারাপ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা বেরিয়ে গেছে। সদস্য দেশগুলো প্রতি ২ মাস অন্তর আমদানি বিল পরিশোধ করে।
জানা গেছে, বাংলাদেশকে দেওয়া আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল বিপিএম-৬ ফর্মুলা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা। এটি চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই প্রকাশ করার কথা ছিল। সেই শর্তের আলোকে গত জুলাই মাস থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এ হিসাব প্রকাশ করছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল ৬ সংস্করণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্রস আন্তর্জাতিক রিজার্ভ সংকলন করেছে। যা বিপিএম-৬ নামেও পরিচিত। মোট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (জিআইআর) বলতে বোঝায় একটি দেশের মোট ধারণকৃত বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ যা আন্তর্জাতিক লেনদেনে ব্যবহারের জন্য সহজলভ্য। তবে বাংলাদেশ এতদিন জিআইআর মানত না।
জানা গেছে, ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। পরে রিজার্ভ থেকে রফতানি উন্নয়ন তহবিলে (ইডিএফ) সরবরাহ করা ৪ দশমিক ১০ বিলিয়ন ও শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার (১৫ কোটি ডলার শোধ), গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ)-এর ২০ কোটি, লং টার্ম ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) তহবিলের ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে দেওয়া ৪ কোটি ৮০ লাখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি)-এর আমানত রিজার্ভে দেখানো হচ্ছিল। আইএমএফ-এর বিপিএম-৬ অনুসারে এগুলো রিজার্ভের অংশ নয়। সব মিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভের হিসাব থেকে ৬ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার বাদ দিতে হবে।
সারাবাংলা/জিএস/একে