মানুষ শেখ হাসিনাকে ‘না’ বলে দিয়েছে: মির্জা ফখরুল
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৩৭ | আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৫৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের মানুষ ‘না’ বলে দিয়েছে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপির এ সমাবেশ আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আপনাদের এই উপস্থিতি প্রমাণ করেছে এ দেশের মানুষ শেখ হাসিনাাকে ‘না’ বলে দিয়েছে। এ দেশের মানুষ এখন আর শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সমস্ত অনৈতিক কাজ করছে। আজকে দেশের সব চেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখে দিয়েছে। অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় তিনি আজকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে, কারাগারা আটক নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। আমাদের সকলের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এই সরকার আমাদের সকল অধিকার কেড়ে নিলেও আজকে যে আওয়াজ উঠছে, সেই আওয়াজ উপেক্ষা করার ক্ষমতা তাদের নেই। তাই আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গত পরশু বলেছেন, এখানে নাকি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আবারও আক্রমণ হতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ আক্রমণ করে বিএনপির ওপর দোষ চাপাবে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বুকে সাহস নিয়ে, শক্তি নিয়ে রাস্তায় নেমে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে সরাতে হবে ‘
তিনি বলেন, ‘কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ, দলমত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করতে হবে। তাই বলতে চাই, বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে কষ্ট করেছেন, আরও কষ্ট করতে হবে। এই সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার তৈরি করে তার মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে জগণের পার্লামেন্ট এবং সরকার গঠন করতে হবে।’
এর আগে, বিকেল পৌনে ৪ টায় রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতাল সামনে থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি নয়াপল্টন অভিমুখে গণমিছিল শুরু করে। মিছিলটি আবুল হোটেল, মালিবাগ রেলগেট, মৌচাক, মালিবাগ মোড়, শান্তিনগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে নয়াপল্টনে পৌঁছায়।
অপর দিকে কমলাপুর থেকে শুরু হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গণমিছিলটি পীরজঙ্গি মাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল মোড় হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নয়াপল্টনে পৌঁছায়। মিছিল দুইটি নয়াপল্টনে পৌঁছানোর পর নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরেরপুল মোড় পর্যন্ত বিএনপির নেতা-কর্মী দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
এদিকে দুপুর আড়াইটা গণমিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১২ টার পর থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নির্দিষ্ট স্পটে আসতে থাকেন। দুপুর ২ টার মধ্যে গণমিছিল শুরুর স্থল লোকজনে ভরে ওঠে। সেখান থেকে শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে আসে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আলাদা মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসার পর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ঢাকা দিক্ষণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান।
সারাবাংলা/এজেড/একে