মার্কিন দূতাবাসে ‘নিষ্ফল অপেক্ষা’, ফিরে গেলেন ডিএজি এমরান
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:২৩ | আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৫
ঢাকা: নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা জানিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে সপরিবারে আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন বরখাস্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে কয়েক ঘণ্টা নিষ্ফল অপেক্ষার পর অবশেষে তিনি দূতাবাস ত্যাগ করেছেন। মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মীদের হস্তক্ষেপে ফিরে আসতে হয়েছে ওই আইনজীবীকে। শুক্রবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তিনি দূতাবাস ত্যাগ করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডিএজি এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ আগে তিনি বেরিয়ে গেছেন।’
এ বিষয়ে মার্কিন দূতাবাস গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না দিলেও দূতাবাস সূত্র জানিয়েছেন, ডিএজি এমরানকে সপরিবারে গুলশান থানা পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়। পরে ডিএজি এমরান জানান, তার পুলিশ পাহারা লাগবে না। তিনি নিজেই বাসায় ফিরে যেতে পারবেন।
উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এমরানকে গুলশান থানায় নেওয়া হয়নি। তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার বিকেলে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দূতাবাসে যান এমরান আহম্মদ। এ সময় তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে…। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন ধরে অনবরত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালোবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে সই করবেন না জানিয়ে আলোচনায় আসেন এমরান আহম্মদ। এরপর শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগের সলিসিটর রুনা নাহিদ আকতার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নিয়োগ বাতিল করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে অপসারণ করা হয় এমরানকে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার্স অর্ডার, ১৯৭২–এর ৪ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগ আদেশ জনস্বার্থে বাতিলক্রমে তাকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।’
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এ বিষয়ে গত সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’
এরপর দিন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতির কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। অন্য কোনো পক্ষকে খুশি করার জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া এটা বলেছেন। নিশ্চয়ই এখানে তার কোনো উদ্দেশ্য ছিল।
সারাবাংলা/জেআর/ইউজে/একে
টপ নিউজ ডিএজি ইমরান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মার্কিন দূতাবাস. ড. ইউনূস