২ কর্মকর্তা ও ১ সিপাহী সোনা চুরির সঙ্গে জড়িত
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৫ | আপডেট: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:০৩
ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টমস হাউজের গুদাম থেকে ৫৫.৫১ কেজি সোনা চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যে আট জনের নামে মামলা হয়েছে। তার মধ্যে তিনজন এই চুরির সঙ্গে জড়িত বলে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির দাবি, সোনা চুরি নয় বরং রীতিমতো লুট করা হয়েছে। কাস্টমসের তদন্ত কমিটি মোটামুটি তিনজনকে শনাক্ত করার কথা বললেও এর পেছনে আরও কেউ জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডিবি সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মামলার এজাহারে যে আটজনের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে চারজন কর্মকর্তা এবং চারজন সিপাহী (কাস্টমসের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী)। এরা হলেন, কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদ রানা, সাইফুল ইসলাম শাহেদ, শহিদুল ইসলাম ও আকতার শেখ। চার সিপাহি হলেন-রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হাওলাদার।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর এদের মধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে যারা সোনা চুরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এরা হলেন-সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও শহীদুল ইসলাম এবং সিপাহী নিয়ামত হাওলাদার।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২০-২০২৩ সাল আগস্ট পর্যন্ত বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময় ধরা পড়া সোনাগুলো এই গুদামে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও শহীদুল ইসলাম এবং সিপাহী নিয়ামত হাওলাদার সুবিধামত সময়ে সোনাগুলো লুট করেছে। এরপর এই দুই কর্মকর্তার বদলি করা হলে অন্য কর্মকর্তারা এসে গুদামে থাকা সোনাগুলো খাতা কলমে বুঝিয়ে নিতে গিয়ে দেখেন গুদামে থাকা সোনার গড়মিল। এরপর পুঙ্খানুপুঙ্খানু তদন্ত করে ধরা পড়ে ৫৫.৫১ কেজি সোনা নেই।
তদন্তে বেরিয়ে আসে, সোনা লুটের সঙ্গে জড়িত তিনজন একাধিকবার বায়তুল মোকাররমে এসেছেন এবং জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেই মূলত লুট হওয়া সোনাগুলো বিক্রি করেছেন। এখন তারা চুরির নাটক করছেন। এরপরেও তিনজন ছাড়াও এজাহারে থাকা বাকি পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর বাইরে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোনা লুট হওয়ার পর কাস্টমসের অধীনে থাকা সকল ভল্টে থাকা সোনার মজুদ মেলানো হয়েছে। একমাত্র ঢাকা কাস্টমসের গুদাম ছাড়া আর কোথাও সোনার গড়মিল নেই। অন্যদিকে ঢাকা কাস্টমসের গুদামে সোনা লুটের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গুদামে থাকা সোনার মজুদও মেলানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, সোনা চুরির সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আদালতে তোলার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার (ডিবি ডিসি উত্তরা) আকরাম হোসেন বলেন, ‘গতকাল মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের পর আমরা আটজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এদের মধ্যে আজকে তিন জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত থাকবে।’
সারাবাংলা/ইউজে/এনইউ