সবাইকে রাজপথে নামার ডাক দিলেন ফখরুল
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৫০ | আপডেট: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:০৩
ঢাকা: এক দফার আন্দোলনে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে রাজপথে নেমে আসার ডাক দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ ডাক দেন।
গণসংহতি আন্দোলনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আজকে বড় দল, ছোট দল, মাঝারি দল— এটা বড় কথা নয়। বিএনপি, নাকি নাগরিক ঐক্য, নাকি গণসংহতি আন্দোলন, না গণতন্ত্র মঞ্চ— এটা বড় কথা নয়। আমাদের দেশ, আমাদের মানুষ আজকে বিপদগ্রস্ত, বিপন্ন। এদের অস্তিত্ব রক্ষা করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
‘আসুন গণতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের রাজপথে নেমে পড়ি। যেখান থেকে আমরা উচ্চারণ করব আর নয়, এক দফা দাবি- তুমি যাও। এনাফ ইজ এনাফ। এখন দয়া করে ছেড়ে দিয়ে জনগণের একটা রাষ্ট্র, জনগণের একটা পার্লামেন্ট, জনগণের সমাজ তৈরির ব্যবস্থা করে দাও। অন্যথায় পালাবার পথ খুঁজে পাবা না। অতীতের ডিক্টেটররা কিন্তু পালাবার পথ খুঁজে পায় নাই’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। সেই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে এখনই সময়। আর এক মুহূর্ত দেরি করার সময় নাই। আজকে সেই সময় এসেছে। আমাদের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সরকারের গুণকীর্তন করার তো দরকার নেই। আপনি যেকোনো সাধারণ মানুষকে ডেকে নিয়ে বলেন, দেখেন এই সরকারকে সমর্থন করে কিনা। উনি বলবেন, যাবে কবে সেটা বলেন। মানুষ আমাদের কাছে সেই প্রশ্ন করে না যে, সরকার এই এই কাজ খারাপ করল কেন। মানুষ আমাদের কাছে প্রশ্ন করে ভাই যাবে কবে?’
তিনি বলেন, ‘এখন দেশের ও বাইরের সমস্ত শক্তি তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক যুদ্ধে হেরে গেছে, আওয়ামী লীগ একটা ঘৃণিত দল। তারা দেশের মধ্যে ও দেশের বাইরে বিশ্বের কাছে ঘৃণিত। সারা পৃথিবী এখন তার পদত্যাগ চায়। খালি আমরা? সবাই পদত্যাগ চায়। আমরাও পদত্যাগের জন্য একদফা নিয়ে লড়াই করছি।’
জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস বলেন, ‘জাতীয় গণফ্রন্ট চায় এই সরকারের পদত্যাগ এবং সংসদ বাতিল। কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাকে বিদায় দিতে হবে। সে হাঁটু গেড়ে বসবে এটা মনে করার কোনো কারণ নাই। আওয়ামী লীগ সরকারকে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে উৎখাত করতে হবে। আর কোনো বিকল্প নেই।’
গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে এই রাষ্ট্রটা নির্মাণ হয়েছে। সেই রাষ্ট্র আজ টিকে থাকবে কিনা সেরকম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে বর্তমান শাসকরা। আওয়ামী লীগ অবৈধ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখতে গিয়ে বাংলাদেশকে তার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের দিক থেকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে, হুমকির মধ্যে ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে আমাদের রাষ্ট্রটাকে একটা দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে, একটা নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করে এই জায়গা নিয়ে এসছে। তারা শুধু জনগণের অধিকার হরণ করেছে তাই নয়, জনগণের সম্পদ লুট করে এ দেশকে দেউলিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে পুরো রাষ্ট্রকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।’
গনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারীর সভাপতিত্বে ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলে ফয়জুল হাকিম লালা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম