ভারতীয় হাসপাতালে বাংলাদেশি গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত দাবি
২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:২৯ | আপডেট: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৩২
ঢাকা: ভারতের হায়দারাবাদের ইয়াসোদা হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় বাংলাদেশি গৃহবধূ ফারহানা আক্তার ওরফে ডিনার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলেন নিহতের স্বামী আল আমিন আল মামুন এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে তার দুই মেয়েও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বাম কাঁধের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। দেশের বড় বড় অর্থোপেডিক্স চিকিৎসদের দেখানোর পরও তার ব্যাথা নিরাময় করতে পারেনি। অবশেষে ভারতের ইয়াসোদা হাসপাতালের একজন নিউরোলজি ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়। পরে গত ২০ জুলাই তাকে নিয়ে হায়দারাবাদ গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। তখন তিনি একজন অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ’র কাছে রেফার্ড করেন।’
তিনি বলেন, ‘পরে রেফার করা চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় মোট ৭০ হাজার রুপি খরচ হয়। পরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানায়, তার বাম কাঁধের জয়েন্টে হাড় বেড়ে গেছে। এ জন্যই হাত উঁচু করতে পারছেন না। পরে অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক ডা. সুনীল সার্জারির পরামর্শ দেন। এ সময় আমার স্ত্রীর অ্যান্টিবায়োটিক এলার্জি থাকার কথা বলা হয়। কিন্তু তারা সেই কথার কর্ণপাত না করেই অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন।’
আল আমিন আল মামুন বলেন, ‘এরপর গত ২৮ জুলাই বেলা ১২টার দিকে অপরারেশনের জন্য ভর্তি করানো হয়। আর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে প্রি-অপারেশন রুমে নেওয়া হয়। এরপর তাকে জানানো হয়, অ্যানেস্থেসিয়া করার পর তা রিয়েক্ট করেছে। তবে তিন/চার ঘণ্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। তার তিন/চার ঘণ্টা পর আইসিইউতে গিয়ে দেখতে পাই, আমার স্ত্রীর শরীর বরফের মতো ঠাণ্ডা হয়ে গেছে এবং সে অচেতন। এ সময় জানানো হয় আমার স্ত্রীর মস্তিষ্ক ৯৫ শতাংশ ডেড হয়ে আছে। পরে আমি কান্না করে উঠলে তারা বলেন, আপনার স্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
তিনি বলতে থাকেন, ‘এরপর গত ২৯ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষায় রাখা হয় যে, তিনি সুস্থ হবেন। এর পরও সুস্থ না হওয়া ৩১ জুলাই লিগ্যাল অ্যাকশন যাওয়ার পরিকল্পনা নিই। গত ১ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে আমাকে আইসিইউ’র ভেতর ডাকা হয়। সেখানে গিয়ে দেখি তিন জন নার্স আমার স্ত্রীর হার্টে অনবরত পান্স করছেন। এর পর ৫টা ৫৫ মিনিটে তিনি মারা যান। আর গত ২ আগস্ট তার লাশ নিয়ে আমরা দেশে আসি।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ডিনাকে ভুল চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমস্ত্রীর কাছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সুস্থ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম