Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘উনি কি পুলিশ কর্মকর্তা, নাকি থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদক?’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৪৪ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৪৭

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেছেন, গতকাল উচ্চপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে একজন কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। তার বক্তব্য শোনার পর মনে হয়েছে উনি কি পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা? নাকি মোহাম্মদপুর, শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। আমি এটার কোন পার্থক্য করতে পারি নাই।

রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

সংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক রেজাউল করিম রানার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এ মানবন্ধন আয়োজন করে।

রিজভী বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রাষ্ট্রের বাহিনী। জনগণের টাকায় তাদেরকে বেতন হয়। জনগণের টাকায় এরা বাড়ি ভাড়াসহ সকল সুযোগ-সুবিধা পায়। সুতরাং তারা এভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পাদকের মতো কথা বলতে পারেন না। যখন পুলিশ কর্মকর্তারা হাসান মাহমুদের ভাষায় কথা বলেন, যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতার ভাষায় কথা বলেন, তখন আর বুঝতে বাকি থাকে না যে আগামী নির্বাচন কী ভয়ংকর নির্বাচন হবে? ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যেতে পারবে না, ভোটাররা যেতে পারবে না, বিরোধী দল অংশগ্রহণ দূরে থাক প্রতিযোগিতাও করতে পারবে না। ওই নির্বাচন হবে একতরফা। আরও একটি অভিনব নীল নকশার নির্বাচন।

‘সেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার আলামত হচ্ছে গতকাল ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দলীয় বক্তব্য’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘এই পুলিশ কর্মকর্তাদের বলে দেওয়া হবে— গ্রামে যারা ভোট দিতে যাবে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। যারা নির্বাচনী প্রচার করবেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। এই ভাবেই শেখ হাসিনা আবারও একতরফা নীল নকাশার নির্বাচন করতে চান। কিন্তু এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতি আমাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। গণতন্ত্রের সুবাতাস বইয়ে দিতে হবে। গণতন্ত্রের মুক্তির দিশারী গণতন্ত্রের বাতিঘর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তা না হলে কারও জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘যারা স্লোগান দেন যারা মিছিল করেন যারা সমাবেশ করে যারা এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে যারা এক দলীয় প্রহসনের নির্বাচনের সমালোচনা করে তাদেরকে শত্রু মনে করেন শেখ হাসিনা।এই কারণে আজকে মজনু জেলে, নিরব জেলে, মোনায়েম মুন্না জেলে, হাবিব জেলে, গোলাম মওলা শাহীন জেলে, সালাউদ্দিন আহমেদ কারাগারে বন্দি, মুসাব্বির কারাগারে।’

তিনি বলেন,’কই জুয়াড়ি ক্যাসিনোর মালিকরা তো আজকে কারাগারে নেই? যারা সন্ত্রাস করেছে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারা কেন কারাগারে নেই? কেন বিচার হয় না আবরার হত্যার? আজকে কেন তানভীর আহমেদ রবিনকে এইভাবে ধাওয়া করে তার ওপর একদম ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল? প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে বিএনপির সভা সমাবেশে যে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় যুবলীগের ছাত্রলীগের নেতারা হামলা চালায় কেন তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় না?’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুলিশি অনুমতির কাছে বন্দি। শুধু বিএনপি নয়, বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো কারও স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র কখনও একসাথে যেতে পারে না। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা আওয়ামী লীগ কখনও শেখেনি। জন্ম থেকেই তারা গুণ্ডা-পাণ্ডাদের ভালবেসেছে।’

তিনি বলেন, ‘গোটা বিশ্ব থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কেউ নাই। হয়তো দু একটা দেশ থাকতে পারে সেখানে তারা খুব হাত পা ধরছেন কাকুতি-মিনতি করছেন তারা যেমনভাবে চান সেইভাবে ক্ষমতা যেন তাদেরকে রাখা হয়। এরকমই শোনা যায় আওয়ামীগের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী উনি পার্শ্ববর্তী দেশের কলকাতার সাংবাদিকদেরকে নাকি ২ টন ইলিশ মাছ পাঠিয়েছেন। আমরা জানি না, এই ঘটনা কতটুকু সত্য। এরকম জনশ্রুতি আছে।’

জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

টপ নিউজ বিএনপি রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর