কুবি শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ হাইকোর্টে স্থগিত

ঢাকা: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করা সাময়িক বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কার প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছিলাম। আজ শুনানি শেষে আদালত ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেছেন।

এর আগে, গতকাল (১৩ আগস্ট) ইকবাল মনোয়ার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।

গত ৯ আগস্ট ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ৮ জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। ইকবাল মনোয়ারের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এ নোটিশ পাঠান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইউজিসি চেয়ারম্যান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ কর্মকর্তা এবং মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর ডাকযোগে এবং ইমেইলে এই নোটিশ পাঠানো হয়।

আইনি নোটিশে বলা হয়, যে অফিস আদেশে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া তার সংবাদে উল্লেখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন। এছাড়া গত ৬ আগস্ট সংশ্লিষ্ট সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়ে ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে উপাচার্যের নিকট চিঠি দিয়েছেন ইকবাল। এখন পর্যন্ত সে চিঠির কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

আইনি নোটিশে আরও বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ৩২ নং ধারা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোনো বোর্ড এবং বিধি তৈরি হয়নি। এই অবস্থায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত।

ইকবাল তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন, যার সঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমের কোনো সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, কোনো সংবাদের বিষয়ে যদি উপাচার্য সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার রয়েছে। তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধুমাত্র উপাচার্যের হুবহু তুলে ধরেছেন যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে।

সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯(২)(খ) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছেন মর্মে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ইকবালকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কারাদেশ দেওয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ন্যায় বিচারের নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে।

গত ৩১ জুলাই উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ২ আগস্ট সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় টপ নিউজ বহিষ্কারাদেশ বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্ট