হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ইউনূসের আবেদন, শুনানি ১৭ আগস্ট
১৩ আগস্ট ২০২৩ ১৬:৩৭ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:০৮
ঢাকা: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযোগ গঠন বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ড. ইউনূসের আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (১৩ আগস্ট) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। অন্যদিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
আর রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটর্জি বাপ্পী।
চলতি বছরের ৬ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চারজনের নামে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা।
বিচার শুরু হওয়া অন্য তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
পরে গত ১৯ মে শ্রম আদালতের আদেশটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূস।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৩ জুলাই শ্রম আদালতে মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পরে রুলের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ২৫ জুলাই চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ না দিয়ে ৩ আগস্ট পর্যন্ত মামলাটিতে স্থিতাবস্থা দেন। একইসঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ৩ আগস্ট দিন ঠিক করে দেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন।
এরপর গত ৩ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের অভিযোগ গঠন বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল (৭ আগস্ট) এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। এরপর আজ চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ গঠন বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন। এরপর এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ড. ইউনূস।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
পরে ওই মামলার আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
এরপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন। তারপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপিল করা হলে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট সেই রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
পরবর্তীতে ড. ইউনূস আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এবং যা গত ৮ মে ড. ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এরপর গত ৬ জুন শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা এ আদেশ দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে