চট্ট.দক্ষিণ ছাত্রদলে বিবাহিত, সন্তানের বাবা ও ব্যাংক-বিমাকর্মী!
১২ আগস্ট ২০২৩ ২০:২৪ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৩ ০৯:৫৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিবাহিত, সন্তানের বাবা, প্রবাসী ব্যাংক-বিমা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের নিয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংগঠনটির পদবঞ্চিত কয়েকজন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কমিটি বাতিল না করলে কর্মসূচি ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার (১২ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখা ছাত্রদলের ৪২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে রবিউল হোসেন রবিকে আহ্বায়ক ও কামরুদ্দীন সবুজকে সদস্য সচিব করা হয়।
নতুন কমিটি প্রত্যাখান করে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পদপ্রত্যাশী জিয়াউল হক জোনাইদ জানান, ২০০৩ সালের একাডেমিক এসএসসি ব্যাচের ছাত্রদের মাধ্যমে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের কথা ছিল। কিন্তু সদ্যঘোষিত কমিটির আহবায়ক রবিউল হোসেন ২০১৩ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। ফলে রবিউলের চেয়ে জ্যেষ্ঠ্য অনেক যোগ্য কর্মী পদবঞ্চিত হয়েছেন। সদস্য সচিব ইসলামী ব্যাংকের ওআর নিজাম রোড শাখায় কর্মরত আছেন।
সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ ২০১৪ সালে এসএসসি পাশ করেছেন এবং তিনি এখন মেটলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। আরেক যুগ্ম আহবায়ক আরেফিন রিয়াদ ইস্টার্ন ব্যাংকের বোয়ালখালী শাখায় কর্মরত আছেন।
যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈমুল আলম নাঈম, রাশেদুল কবির ও ফরহাদুল কবির বিবাহিত। এর মধ্যে ১৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল কবির এক সন্তানের জনক বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
জিয়াউল হক জোনাইদ বলেন, ‘ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশীদের অবিবাহিত হতে হবে- এমন বিধিনিষেধ আছে। অথচ ঘোষিত ৪২ সদস্যের কমিটির অনেকেই বিবাহিত। এমনকি প্রবাসী কয়েকজনকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে। গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করেই এই কমিটি দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কমিটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, কমিটির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাকে জোর করে সই নেওয়া হয়েছে। বিবাহিতরা কমিটিতে পদ পেয়ে বউ নিয়ে এখন ফূর্তি করছে। রাজপথের ত্যাগী কর্মীরা কমিটিতে স্থান পায়নি। যদি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কমিটি বাতিল করা না হয় তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।’
এ বিষয়ে জানতে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল কবিরের মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে, ২০১৮ সালের ১ আগস্ট শহীদুল আলমকে সভাপতি ও মোহাম্মদ মহসিনকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের দক্ষিণ জেলার আংশিক কমিটি অনুমোদন দিয়েছিলেন ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। এই কমিটি ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সংসদ।
এদিকে, কমিটি ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব হয়েছেন পদবঞ্চিতরা। ফারদিন ইয়াস নামে একজন পদপ্রত্যাশী নতুন কমিটির আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবিকে ‘শ্রমিক লীগ নেতা’ উল্লেখ করে পোস্ট দেন। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সঙ্গে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে যুগ্ম আহবায়ক নুর শাহাদ খান রিপনের। আনোয়ারা উপজেলার একটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান কাইয়ূম শাহ নির্বাচিত হওয়ার পর রিপন মিষ্টি বিতরণ করছেন, এমন ছবিও ফেসবুকে মিলছে।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম